পাটকল শ্রমিকরা ফের অনশনে

মজুরি কমিশন বাস্তাবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা ফের আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2019, 04:58 PM
Updated : 29 Dec 2019, 04:58 PM

রোববার ক্রিসেন্ট জুটমিলের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা কর্মসূচি শুরু করেন।

তিন দফা আলোচনায় কোনো সুরাহা না হওয়ায় গত ২৬ ডিসেম্বর তারা অনশনের হুমকি দিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাবেক সিবিএ সভাপতি মুরাদ হোসেন বলেন, তিন দফা সময় দিয়েও সমাধান না হওয়ার কারণে ফের আমরণ অনশন শুরু করতে বাধ্য হয়েছেন শ্রমিকরা।

“আটরা শিল্পাঞ্চলের ইস্টার্ন জুট মিলের প্রধান ফটকের সামনে বেলা ২টায় অনশন শুরু করেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।”

আলিম ও ইস্টার্ন জুটমিল শ্রমিক-কর্মচারীদের অনশন চলার সময় ইস্টার্ন জুট মিল সিবিএ সভাপতি মো. আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন সিবিএ সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম লিটু, সাধারণ সম্পাদক আ. হামিদ সরদার, ইউসুফ আলী, আলম হোসেন, আমিরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, আবদুল হক মহলদার, হাফেজ আ. সালাম, ইজদান আলী, মোজাম্মেল হক, হাসান শরীফ প্রমুখ।

অনশনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য ও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কামরুল হাসান শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সমর্থন জানান।

পাটকল সিবিএ শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন বলেন, ১ম দফায় অনশনে খুলনায় দুইজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তারপরও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। শ্রমিকের পেটে ভাত নেই, পরনে কাপড় নেই। কিন্তু মন্ত্রণালয় আলোচনার নামে বার বার সময়ক্ষেপণ করছে। এতে হতাশ শ্রমিকরা দাবি আদায়ের আন্দোলনে আবার রাজপথে নেমেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে কর্মরত প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিকের ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সবমিলিয়ে বকেয়া পাওনা ৪০-৪৫ কোটি টাকা। ন্যায্য মজুরি-বেতন না পেয়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা গত ২৩ নভেম্বর থেকে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সভা, বিক্ষোভ মিছিলসহ ধর্মঘটের মত কর্মসূচি পালন করে আসছে। গত ১০ ডিসেম্বর দেশের ২৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের মধ্যে ১২টির শ্রমিকরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।  

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে এ আন্দোলনে অংশ নেয় খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি পাটকলের শ্রমিক। সেখানে গত বৃহস্পতিবার অনশনে অংশ নেওয়া প্লাটিনাম জুটমিলের হেসিয়ান তাঁতের শ্রমিক আব্দুস সাত্তার (৫৫) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাও যান। এছাড়া দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন।

এরপর গত ১৪ ডিসেম্বর কর্মসূচি তিনদিনের জন্য স্থগিত করে দাবি মানার আহ্বান জানানো হয়। এরপরও দাবি পূরণ না হওয়ায় গত ২৬ ডিসেম্বর তারা ফের অনশনে যাওয়ার হুমকি দেন।