দিনাজপুরে তীব্র শীতে কষ্টে শ্রমজীবীরা

কনকনে ঠাণ্ডা ও হিমেল হওয়ার মধ্যে দিনাজপুরের কর্মজীবী মানুষ ভোগান্তি সহ্য করে দিনাতিপাত করছেন।

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Dec 2019, 08:01 AM
Updated : 28 Dec 2019, 09:29 AM

শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়ছে দিনাজপুরে।

হাড় কাঁপানো শীত ও হিমেল হাওয়ার সঙ্গে আছে ঘন কুয়াশার দাপট।

তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাচ্ছে শীতের দাপট। দিনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ঠাণ্ডা কিছুটা কম থাকলেও বিকাল থেকে বয়ে যাচ্ছে হিমেল হাওয়া। কুয়াশার কারণে দিনেও হেডলাই জ্বেলে গাড়ি পালাতে হচ্ছে চালকদের।

এতে সব শ্রেণিপেশার মানুষ ভোগান্তিতে পড়লেও শ্রমজীবীদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। যাদের দৈনিক রোজগার থেকে অন্ন সংস্থান করতে হয় তাদের প্রতিদিন কাজে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এছাড়াও রয়েছে ছিন্নমূল মানুষ, যারা বাইরে এখানে সেখানে দিন ও রাত কাটাতে হয়।

শনিবার রংপুর বিভাগে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ছাড়া আর সব জেলার তাপমাত্র এক অংকে রয়েছে।

রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা ছাড়া বাকি জেলাগুলোরও শনিবারের তাপমাত্রা এক অংকে রয়েছে।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শুক্রবার দিনাজপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সদর উপজেলার গাবুড়া এলাকায় বোরো জমিতে কর্মরত কৃষি শ্রমিক মুকুল চন্দ্র রায় ও শ্যামল রায় জানান প্রচণ্ড শীতে মাঠে চরম কষ্টের মধ্যে তাদের কাজ করতে হচ্ছে।

মুকুল চন্দ্র রায় বলেন, “হাতে কোদাল ধরাই অসম্ভব হয়ে পড়ছে। ঠাণ্ডায় হাত-পা ‘কুকড়া’ হয়ে যাচ্ছে। তারপরও ফসল ফলাতে কাজ করতেই হচ্ছে।”

বহুতল ভবনে কর্মরত নির্মাণ শ্রমিক সহিদুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূর থেকে সাইকেল নিয়ে শহরে কাজে আসেন।

“ঠাণ্ডায় হাত চলে না, তারপরও কাদাপানি ও সিমেন্টের কাজ করতে হচ্ছে। কষ্ট হলেও পেট রক্ষায় কাজ করা ছাড়া উপায় নেই। বাড়িত বসে থাকলে তো খাবার জুটবে না।”

শহরের শাখারী পট্টিতে বসবাসকারী হতদরিদ্ররাও শীতে দুর্বিসহ জীবনযাপন করছেন। প্রচণ্ড শীতে তাদের খাওয়ার সমস্যাই বেশি। ঘরে খাবার থাকলেও ঠাণ্ডা খাবারই খেতে হয়। বার বার খাবার গরম করে খাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ঠাণ্ডা পানি পান করে শিশুদের সঙ্গে বৃদ্ধরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

শিশু ও বয়স্করা ঠাণ্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সোহেল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বহির্বিভাগে রোগীর আগমন বেশি হলেও ভর্তির সংখ্যা স্বাভাবিক রয়েছে। তারা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে।  

দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. ওয়ারেশ জানান, হাসপাতাল ছাড়াও ব্যক্তিগত চেম্বার ও ক্লিনিকে প্রচুর রোগী আসছে ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগ নিয়ে।