চাঁপাইনবাবগঞ্জের গ্রামে নবান্ন উৎসব

চাঁপাইনবাবগঞ্জের একটি গ্রামে পিঠা-পুলির আয়োজন আর গ্রামীণ নাচ-গানের মধ্য দিয়ে নবান্ন উৎসব হয়েছে।

রবিউল হাসান ডলার চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2019, 02:32 PM
Updated : 27 Dec 2019, 02:32 PM

জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাবুরঘোন গ্রামে শুক্রবার এই উৎসব হয়। উৎসবের হারাতে বসা গ্রামীণ গীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন বয়সের নারীরা।

কলসি কাঁখে নদীতে গিয়ে পানি আনা থেকে শুরু করে গোলা থেকে ধান বের করা, সেই ধান ঢেঁকিতে ভেনে চাল বের করা, তারপর জাঁতায় চাল কোটার পর বাড়ির আঙিনায় দলবদ্ধ হয়ে বসে পিঠা-পুলি বানান আর গীত পরিবেশন করেন তরুণীরা।

বিকালে গ্রামের একটি ফাঁকা মাঠে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সেখানে গান, নাচ, আবৃত্তিসহ ছিল নানান পরিবেশনা।

উৎসব তদারক করেন ওই গ্রামের স্কুলশিক্ষিক মমতাজ বেগম। তাকে সহযোগিতা করেন তার বোন শামীমা বেগম।

মমতাজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গত ১০ বছর ধরে তারা নিয়মিত এই উৎসব আয়োজন করে আসছেন। বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের সময় থেকেই উৎসবের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ওই সময় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান সংগ্রহ করা হয় উৎসবের জন্য। গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারই উৎসবে অংশ নিতে ধান দেয়। সেই ধান থেকেই বানানো হয় উৎসবের পিঠা-পুলি।

মমতাজ বেগমের বাড়ির আঙিনায় গোল হয়ে বসে তারা বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানান। পিঠা বানাতে বানাতে সমস্বরে গান পিঠা বানানোর গান।

তেলপিঠা, তিলপিঠা, ভাপাপিঠা, পুলিপিঠা, দুধপিঠাসহ বাহারি নামের পিঠা বানানো হয়। গ্রামের শিশু ও তরুণীরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন বলে জানান এলাকাবাসী।

মমতাজ বলেন, “আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতি অনেকটাই বিলুপ্তির দিকে। গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ গীত ও পিঠা-পুলির উৎসব যখন হারাতে বসেছিল, তখনই আমরা এসব রক্ষা শুরু করি। এখন গ্রামের মেয়েরা শতাধিক গ্রামীণ গীত গাইতে পারে। অনেক ধরনের পিঠা-পুলি বানাতে পারে।”