ঝালকাঠিতে মানছে না ইটভাটার আইন

ঝালকাঠির বেশির ভাগ ইটভাটা আইন মানছে না। চিমনি এবং পাঁজায় কাঠ দিয়ে পুরাতন পদ্ধতিতে ইট পোড়ানো হচ্ছে অধিকাংশ ভাটায়।

ঝালকাঠি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Dec 2019, 05:15 PM
Updated : 17 Dec 2019, 05:23 PM

২০১৯ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী ইটভাটা হতে হবে স্বয়ংক্রিয়। পোড়াতে হবে কয়লা দিয়ে; কিন্তু এতে খরচ বেশি পড়ে বলে অধিকাংশ মালিক কাঠ দিয়ে পুরনো পদ্ধতিতে ইট পোড়ান।

বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া হালনাগাদ তথ্যে ঝালকাঠি জেলার ৬৫টি ভাটা পাওয়া গেছে, যার মধ্যে মাত্র ১৯টি আইন মেনে চলছে; অর্থ এগুলো অটোব্রিকস। বাকিগুলো ১২০ ফুটের চিমটি, ড্রাম চিমটি এবং পাঁজা। আর তারমধ্যে  চলতি বছর পর্যন্ত নবায়ণ করা হয়েছে মাত্র ১০টি ভাটা।

এ ব্যপারে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৯ সালের সংশোধিত ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী ঝিকঝাক বা অটোব্রিকস ছাড়া সব ভাটাই অবৈধ।

“আমরা এসব অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি। যেসব বৈধ ভাটার নবায়ণ হয়নি সেগুলোকে নবায়ণ করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”

ঝালকাঠি শহরতলীর এআরএস ইটভাটার প্রতিনিধি জয়ন্তকুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি নির্দেশেই ১২০ ফুটের চিমটি স্থাপন করা হয়েছিল। এখন নতুন আইনে ঝিকঝাক বা অটোব্রিকস করা অসম্ভব ব্যপার। এতে যে পরিমাণ সময় এবং অর্থের প্রয়োজন পড়বে তা বেশিরভাগ ভাটা মালিকের পক্ষে সম্ভব হবে না।

সরেজমিনে আরও জানা গেছে, ইট প্রস্তুত করার জন্য যে পরিমাণ মাটির প্রয়োজন পড়ে তা ঝালকাঠি জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোর নদীর চর এবং ভেঙে যাওয়া নদীর তীর থেকে সংগ্রহ করেন ভাটা মালিকরা।

আট থেকে নয় হাজার টাকা দরে মাটির হাজার সিএফটি ক্রয় করা হয়; কিন্তু চর কাটা এবং ভাঙনকূলের মাটি কাটায় নদীভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে। ঝুঁকিতে পড়ছে পরিবেশ।

অপরদিকে ভাটাগুলোতে ইটপোড়ানোর জন্য খনিজ কয়লা রাখা থাকলেও বেশির ভাই ভাটায় কাঠ দিয়েই ইট পোড়ানো হয়।

শহরের ইটভাটা এআরএম ব্রিকস এর ম্যানেজার সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রতি টন কয়লার দাম পড়ে ১২ হাজার টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মালিকরা এক মণ কাঠ কেনেন একশ টাকায়। তাই কাঠ পুড়িয়ে ইট প্রস্তুত করায় খরচ অনেক কম লাগে। 

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নতুন আইনের আওতায় সব ভাটাগুলোকেই আনা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদা আক্তার (এডিএম) বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইটাভাটা আসলে মৌসুমী ব্যবসা। এ মাস থেকেই জেলার বিভিন্ন ভাটায় ইটপ্রস্তুত শুরু হয়েছে। আমরা তালিকাভূক্ত সব ইটভাটাকে নতুন আইনে ইট প্রস্তুত করার জন্য চিঠি দিয়েছি। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতি সপ্তাহে ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।”