সারাদেশে লাল-সবুজ উড়িয়ে বিজয় উদযাপন

সারাদেশে শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে, ডিসপ্লে, কুচকাওয়াজ, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানে লাল-সবুজ উড়িয়ে বিজয় উদযাপন করেছে বাংলাদেশের মানুষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2019, 11:16 AM
Updated : 16 Dec 2019, 11:53 AM

বিজয়ের ৪৮ বছর পূর্তিতে সোমবার প্রথম প্রহর থেকে এসব অনুষ্ঠান করেন বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। খবর পাঠিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিরা:

রংপুর

ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টার ঘর পার হতেই বিজয় স্লোগানে প্রকম্পিত হয় রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসা সর্বস্তরের মানুষের মুখে বিজয়ের স্লোগানে মুখর হয় বিজয় দিবসের প্রথম প্রহর। এতে অংশ নেয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

ছোট-বড় সব বয়সী মানুষ সমবেত কণ্ঠে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মর্যাদার সঙ্গে মাথা উঁচু করে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় স্মরণ করা হয় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

ফেনী

ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরের মডার্ন মোড়ে স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভে বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থা শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে মহান বিজয় দিবস। সোমবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে সাতক্ষীরা শহিদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে ৩১ বার তোপধনির মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও বিভিন্ন ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়।

পুলিশ, বিএনসিসি, ব্যাটালিয়ান আনসার, কারারক্ষী, রোভার স্কাউট, বয়স্কাউট, গালর্স গাইড, শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমন্বয়ে কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী, সকাল ১০টায় স্টেডিয়াম ভবনে রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বেনাপোল

যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল, নাভারন ও বাগআঁচড়ায় শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রচনা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বিজয় উদযাপন করা হয়েছে।

উপজেলার কাশিপুরে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের সমাধি সৌধ, কাগজপুকুর স্মৃতি সৌধ ও বাগআঁচড়ায় বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ করা হয়।

রাজশাহী

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টায় শার্শা স্টেডিয়ামে পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, সালাম গ্রহণ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। এ প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন।

বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা চত্বরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার’ শীর্ষক আলোচনা সভা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলক কুমার মণ্ডল, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু, জেলা পরিষদ সদস্য এসএম ইব্রাহিম খলিল অনুষ্ঠানে ছিলেন।

বিজয় দিবস উপলক্ষে গরিব ও দুস্থ মানুষের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করে বাগআঁচড়া সাতমাইলের জোহরা মেডিকেল সেন্টার ও রুবা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

ময়মনসিংহ

দিনের প্রথম প্রহরে বিজয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে শহরের ব্রিজ মোড় থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত। আশপাশের এলাকায়ও ছিল মানুষের ঢল।

সোমবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

প্রথম প্রহরে সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন। পরে সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামূল হক টিটু শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। 

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান, ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজ নিবাস চন্দ্র মাঝি, জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, ময়মনসিংহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার আনোয়ার হোসেন, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের সদস্য সচিব সেলিম সরকার।

জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ, বিএনপি, যুবলীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ, জেলা আইনজীবী সমিতি, ন্যাপ, জাসদ শহীদের প্রতি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

বেনাপোল

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শহরের রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও সালাম গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। এছাড়া সম্মিলিত কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

মাগুরা

মুক্তিযোদ্ধা আছাদুজ্জামান স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় মাহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসক আশরাফুল আলম, পুলিশ সুপার খান মুহাম্মদ রেজোয়ানসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিজয় দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। পরে হয় কুজকাওয়াজ, শরীর চর্চা প্রদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ।

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, স্কাউট, রোভার স্কাউট, গালর্স গাইড, বিএনসিসি, পুলিশ, আনসার সদস্যরা এসব কর্মসূচিতে অংশ নেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।

ফরিদপুর

নানা আয়োজনে মধ্য দিয়ে ফরিদপুরে মহান বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। দিনটি উপলক্ষে সোমবার ভোরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৩১ বার তোপধ্বনি দেওয়ার পাশাপাশি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল ৮টায় শহরের গোয়ালচামট স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দেন সদর আসনের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান।

পরে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ফরিদপুর প্রেসক্লাব, বিভিন্ন স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন।

এরপর সকাল সাড়ে ৮টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে স্মৃতিস্তম্ভে থেকে একটি বিজয় শোভাযাত্রা বের হয়।

সকাল ৯টায় স্টেডিয়ামে কুজকাওয়াজ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের সমাবেশ হয়। বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার ব্যবস্থা ছিল।

কুমিল্লা

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যথাযথ মর্যদায় বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানিয়ে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে কুমিল্লায়।

দিবসটি উপলক্ষে ভোরে ৩১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় কুমিল্লা শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহা উদ্দিন বাহার, জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম।

এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডসহ জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

রাজশাহী

সকাল ৮টায় কুমিল্লা স্টেডিয়ামে বিভিন্ন কলেজ, স্কুল, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন সংগঠনের কুচকাওয়াজ হয়।

চুয়াডাঙ্গা

যথাযোগ্য মর্যদা ও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

শহরের হাসান চত্বরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে প্রশাসন, রাজনৈতিক সংগঠনসহ সরকারি-বেসরকরি সংগঠনগুলো শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে।

সকাল ৮টায় চুয়াডাঙ্গা পুরাতন স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম সরকার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় কুচকাওয়াচ প্রদর্শন। কুচকাওয়াজে অংশ নেয় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, গার্লস গাইড, বিএনসিসি, স্কাউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা। পরে সেখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ডিসপ্লে হয়।

এছাড়া বেলা ১১টায় শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন এ সংবর্ধনার আয়োজন করে।

ভোলা

ভোলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলকে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণকরা হয়। জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম ছিদ্দিক, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

পরে ভোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ, সরকারি-বেসরকারি সংগঠনগুলো একে একে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। এ সময় এক মিনিট নীরবতা পালন করে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন সবাই।

ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামে বিজয় দিবসের সমাবেশ ও কুচকাওয়াজ হয়। এছাড়া জেলার সব উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।