ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ-হত্যায় সন্দেহভাজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের অভিযানের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Dec 2019, 04:44 AM
Updated : 16 Dec 2019, 10:40 AM

রোববার রাত ২টার দিকে ফরিদপুর শহরের রথখোলা লঞ্চঘাট জোড়া ব্রিজের সামনে গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই বেলাল হোসাইনের ভাষ্য।

নিহত ইয়াসিন মোল্লা (২২) শহরের ওয়্যারলেস পাড়ার মনি মোল্লার ছেলে। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই বিভিন্ন অভিযোগে তিনটি মামলা ছিল। গত শুক্রবার ১৪ বছর বয়সী এক প্রতিবন্ধী কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পর ইয়াসিনকেই সন্দেহ করছিল পুলিশ।

গত ১২ ডিসেম্বর বিকালে শহরের রাজেন্দ্র কলেজের মাঠে মেলার ভিড় থেকে নিখোঁজ হয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েটি। পরদিন সন্ধ্যায় রাজেন্দ্র কলেজের পাশেই বিটিসিএল অফিসের সীমানা থেকে তার বিবস্ত্র লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সেদিন জানায়, মেয়েটির পোশাক গলায় পেঁচিয়েই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারারো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যায়। 

লাশ দেশে পুলিশ কর্মকর্তাদের ধারণা হয়, হত্যার আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল ওই কিশোরীকে। ওই ঘটনা পুরো শহরের ক্ষোভের জন্ম দেয়। বিভিন্ন সংগঠন খুনিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করে।

শুক্রবার রাতেই কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন মেয়েটির বাবা। তদন্তে নেমে রাজেন্দ্র কলেজের মেলার মাঠের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ইয়াছিনকে চিহৃত করে পুলিশ।

এসআই বেলাল বলেন, “স্থানীয়দের সহয়তায় রোববার রাতে শহরের ওয়্যারলেসপাড়া এলাকা থেকে ইয়াছিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যা ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করে।”

ওই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ঘটনার দিন ইয়াছিনের ব্যবহৃত পোশাক ও অস্ত্র উদ্ধারে তাকে সঙ্গে নিয়েই পুলিশ গভীর রাতে অভিযানে বের হয় বলে এই পুলিশ সদস্যের ভাষ্য।

তিনি বলেন, “পুলিশ রথখোলা লঞ্চঘাট জোড়া ব্রিজ এলাকায় গেলে ইয়াছিনকে ছিনিয়ে নিতে হামলা করে তার সহযোগীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে পুলিশের গোলাগুলি হয়। পরে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে গেলে ইয়াছিনকে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।”

গুলিবিদ্ধ ইয়াছিনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান এসআই বেলাল।

তিনি বলেন, এ অভিযানে তিন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় গোরস্থান মসজিদে জানাজা শেষে শহরের আলীপুর পৌর কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

ওই কিশোরীর বাবা রিকশা চালানোর পাশাপাশি একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেন। তার তিন মেয়ের মধ্যে ১৪ বছরের ওই কিশোরী ছিল সবার বড়। জন্ম থেকেই সে ছিল বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।