‘বাল্যবিয়ের ভয়ে কিশোরীর পলায়ন’, প্রবাসীর নামে অপহরণ মামলা  

গোপালগঞ্জে এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগে স্থানীয় এক প্রবাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার বাবা।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2019, 05:24 PM
Updated : 15 Dec 2019, 05:26 PM

তবে জেএসসি পরীক্ষা দেওয়া ওই মেয়েটির ভাষ্য, পরিবারের সদস্যরা বিয়ে দিতে চায় বলে সে আত্মীয় বাড়িতে পালিয়ে রয়েছে।

মামলার আসামি মনিরুজ্জামান শেখ (৩৫) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চর শ্রীরামকান্দি গ্রামের শাজাহান শেখের ছেলে। তিনি মলয়েশিয়া থাকেন। সম্প্রতি বাড়ি এসেছেন।

মনিরুজ্জামানের মা রোকেয়া বেগম (৬০) রোবার স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, তার ছেলে মনিরুজ্জামান মালয়েশিয়া থেকে সম্প্রতি ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। পার্শ্ববর্তী গিমাডাঙ্গা পূর্বপাড়া গ্রামের এক অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য (৫০) তার মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

রোকেয়া বলেন, মামলার বাদীর ওই মেয়ে এ বছর টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। গত ২৪ নভেম্বর সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।

“এ ঘটনায় গত ৮ ডিসেম্বর মেয়েটির বাবা আমার দুই ছেলে মনিরুজ্জামান ও ইকবাল শেখকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন।”

এরপর থেকে তাদের বাড়ির সব পুরুষ সদস্য গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানান তিনি।

তার ছেলেকে ফাঁসিয়ে বেশি টাকা আদায় করা ওই মামলার বাদীর উদ্দেশ্য বলে রোকেয়া বেগমের অভিযোগ।

এ ব্যাপারে মামলার বাদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার মেয়েকে মনিরুজ্জামান অপহরণ করেছে। এ বিয়ষে আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আমি আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য মামলা করেছি। মেয়েকে উদ্ধারের স্বার্থেই কাজ করে যাচ্ছি। এতে কেউ হয়রানির শিকার হলে আমার কিছুই করার নেই।”

এদিকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়া স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকমের কথা হয়েছে।

মেয়েটির ভাষ্য, “আমাকে কেউ অপহরণ করেনি। এখনও আমার বিয়ের বয়স হয়নি; তারপরও আমার বাবা আমাকে জোর করে বিয়ে দিতে চান। তাই আমি আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপন করেছি। অপহরণের বিষয়টি সত্য নয়।”

টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি এ এফ এম নাসিম বলেন, “মামলা দায়েরের পর আমরা আসামি গ্রেপ্তার ও স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছি।”

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, “আমরা এ মামলার তদন্ত শুরু করেছি। দ্রুত এ ঘটনার সত্য উদঘাটিত হবে। তবে নিরপরাধ কেউ হয়রানির শিকার হবে না।”