জেলায় জেলায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা

জেলায় জেলায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2019, 04:02 PM
Updated : 14 Dec 2019, 04:47 PM

দিনটি উপলক্ষে শনিবার শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার পাশাপাশি আলোচনা অনুষ্ঠান, শোকযাত্রা, নাটক ও তথ্যচিত্র প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন সচেতন দেশবাসী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

বাগেরহাট

বাগেরহাটে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা হয়।

সকাল ৮টায় বাগেরহাট শহরের ডাকবাংলো ঘাটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

এ সময় বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায়, বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি আহাদ উদ্দীন হায়দার, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সরদার নাসির উদ্দীনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিলেন।

বরগুনা

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়েছে।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক জেলা কমান্ডার আবদুর রশিদ মিয়া, জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমেদ, সিভিল সার্জন হুমায়ূন শাহিন খান, বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি চিত্তরঞ্জন শীল, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম বরগুনার সভাপতি আনোয়ার হোসেন মনোয়ার, জেলা এনজিও ফোরামের সভাপতি আবদুল মোতালেব মৃধা, মুক্তিযোদ্ধা সুখরঞ্জন শীল, বরগুনা জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মনির হোসেন কামাল, বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক জাহিদুল ইসলাম, জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা আক্তার সভায় ছিলেন।

কুমিল্লা

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যথাযথ মর্যদায় কুমিল্লায় বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষে সকালে কালো পতাকা উত্তেলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, শহরের সিটি উদ্যানের বঙ্গবন্ধু ম্যূরালসহ শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জেলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

তারা বিদেশে পালিয়ে থাকা শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত বিচারের দাবি জানান। এ উপলক্ষে বিকালে শহরেরের টাউন মাঠের মুক্ত মঞ্চে সমাবেশ হয়।

ফরিদপুর

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ব্যতিক্রম আয়োজন ছিল ফরিদপুরে টাউন থিয়েটারে। দিবসটিকে নতুন প্রজন্মের কাছে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য ‘স্মৃতিতে অম্লান’ শিরোনামে রায়ের বাজার বধ্যভূমির কথা স্মরণ করা হয়। 

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের টাউন থিয়েটারের হলরুমের সামনে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রায়ের বাজারের ঘটনা প্রতীকী আকারে প্রদর্শন করেন জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও নাট্যকাররা।

শেখ জামাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন গণকবরে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার আলীমুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধা সংসদ, জেলা যুবলীগ, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

রায়ের বাজার বধ্যভূমির প্রেক্ষাপট তুলে ধরা ‘স্মৃতিতে অম্লান’ শিরোনামের এক নাট্যানুষ্ঠানে। গোবিন্দ বাগচী মৃন্ময়ের পরিকল্পনায় ও নির্দেশনায় এই নাট্য প্রদর্শন করে ফরিদপুরের চাদের হাট চিন্ড্রেন থিয়েটার।

গাইবান্ধা

কিংশুক সাহিত্য পরিষদের আয়োজনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় সাদুল্লাপুর সরকারি কলেজের আবু তালেব মিয়া মিলনায়তনে।

গাইবান্ধা উদীচী সংসদের সভাপতি জহুরুল কাইয়ুম, কিংশুক সাহিত্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মাহমুদুল হক মিলন, সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল, খন্দকার জিল্লুর রহমান, শামসুজ্জোহা প্রামাণিক রাঙ্গা, সাদুল্লপুর থানার ওসি মাসুদ রানা, মুক্তিযোদ্ধা নুরুন নবী সরকার তারা, মুক্তিযোদ্ধা দেলায়ার হোসেন, সাদুল্লাপুর গার্লস ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হোসনে আরা মুন্সি স্মমণ সভায় ছিলেন।

সভা পরিচালনা করেন কিংশুক সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম রেজা।

শরীয়তপুর

সকাল ১১টায় জেলা আওয়ামী লীগ তাদের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

দলের জেলা সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে, সহ-সভাপতি আবুল হাসেম তপাদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর্জা হজরত আলী সাইজী, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জল, সদর উপজেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পৌরসভা সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন প্রমুখ।

নেত্রকোণা

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের মোক্তারপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে।

জেলা প্রশাসক মঈন-উল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, মুক্তিযোদ্ধা শামছুজ্জোহা, নুরুল আমিন, আইয়োব আলী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান গাজী মুর্তুজা হোসেন কামাল প্রমুখ।

বক্তারা সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দালালদের প্রতিহত করার আহবান জানান। দেশের উন্নয়নে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কাজ করার আহ্বান জানান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়।

সকাল সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপাচার্য ভবন থেকে একটি প্রভাতফেরি বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনার ও প্রশাসন ভবনের পশ্চিম চত্বরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুস্পস্তবক অর্পণ করে। সেখানে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রভাতফেরিতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

এ সময় অন্যদের মধ্যে প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রভাষ কুমার কর্মকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালাসহ বিভিন্ন হল প্রশাসন, পেশাজীবী সমিতি ও সংগঠনসহ অন্যরাও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

দিবসের কর্মসূচিতে আরও ছিল বাদ জোহর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত ও সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা।

শেরপুর

শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শনিবার শেরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল ১১টায়  জেলা কালেক্টরেট চত্বরে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব।

শোভাযাত্রা শেষে জেলা প্রশাসনের তুলশিমালা ট্রেনিং সেন্টারে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) এটিএম জিয়াউল ইসলামের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল, পৌর মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদ এজেড মোরশেদ আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট নমিতা দে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা প্রকাশ দত্ত, সাংবাদিক দেবাশীষ ভট্টাচার্য্য প্রমুখ।

আলোচনা শেষে জেলা শিশু একাডেমি আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় ৬ জন বিজয়ী শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।