নীলফামারীতে স্কুল ঘেঁষে তামাক কারখানা

নীলফামারীতে একটি বিদ্যালয় ঘেঁষে তামাক প্রক্রিয়াকরণ কারখানা গড়ে তোলায় পড়ালেখা হুমকির মুখে পড়েছে বলে শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2019, 12:19 PM
Updated : 14 Dec 2019, 12:19 PM

সরেজমিনে সদর উপজেলার পলাশবাড়ি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সানফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন নামে একটি বিদ্যালয় ঘেঁষে তামাক প্রক্রিয়াকরণের এই কারখানাটি স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে উন্মুক্ত উঠানে তামাক গুঁড়া করার সময় বাতাসে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে।

কারখানাটির কোনো অনুমোদনও নেই বলে এর ব্যবস্থাপক জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়টির শিক্ষক আব্দুল মতিন বলেন, “আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০০০ সালে যাত্রা করে। বর্তমানে এখানে প্লে গ্রুপ থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০০ শিক্ষার্থী রয়েছে।

“বছর দুই আগে বিদ্যালয় ঘেঁষে তামাক প্রক্রিয়াকরণ কারখানা স্থাপন করার পর থেকে এখানে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”

বিদ্যালয়ের শিক্ষক পূরবী মোহন্ত বলেন, “কারখানার বিষাক্ত ধুলায় শিশুদের পাশপাশি আমাদেরও সমস্যা হয়। এমন হাঁচি-কাশি শুরু হয় যে প্রায়ই কেউ না কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ি। ক্লাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।”

শিক্ষার্থী নুপুর রায় বলল, “প্রায়ই শ্বাস আটকে যায়। নিশ্বাস নিতে পারি না। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে খাওয়ার রুচি থাকে না।”

এ ব্যাপারে অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির অধ্যক্ষ চঞ্চল চ্যাটার্জি।

কারখানাটির মালিক স্থানীয় দীপু সরকার। তার চাচা হরলাল সরকার এর ব্যবম্থাপক।

হরলাল বলেন, এখানে তারা সারা বছর একটি বিড়ি কোম্পানি এবং একটি গুল কোম্পানির জন্য তামাক প্রক্রিয়া করেন। সারা বছর ১৫ জন শ্রমিক কাজ করলেও তামাক মৌসুমে ৫০ থেকে ৬০ জন কাজ করেন।

পরিবেশ ছাড়পত্র আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “এটা নেওয়া হয়নি। এর কোনো প্রয়োজনও নেই। কারণ এতে কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। এলাকার ক্ষতি করার জন্য আমি এটা করি নাই। আমি তামাকের পাতা ভাঙছি না। তামাকের ডাঁটি কাটছি। ডাঁটিতে পাতার মত গন্ধ নাই। তার পরও ধুলা বন্ধ করার জন্য অনেক প্রটেকশন দিয়েছি।”

এখানে তামাক করাখানার জন্য কোনো ট্রেড লাইসেন্সও দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পলাশবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন প্রামাণিক।

তিনি বলেন, “চালের চাতাল করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। সেখানে তামাক কারখানা করা হয়েছে এমন অভিযোগ কেউ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বন্ধ করে দেব।”

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল মোতালেব সরকার বলেন, “ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”