যশোরে এক আজিজের বদলে ‘আরেক আজিজ’ গ্রেপ্তার

যশোরে এক আব্দুল আজিজের পরিবর্তে আরেক আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2019, 06:12 PM
Updated : 13 Dec 2019, 06:18 PM

তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তার আবদুল আজিজ জেলার চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আহাদ আলী দফাদারের ছেলে।

গ্রেপ্তার আজিজের স্ত্রী জলি বেগম অভিযোগ করেন, গত ৯ ডিসেম্বর রাতে চৌগাছা থানার এএসআই আজাদ আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আসামি আব্দুল আজিজকে বাদ দিয়ে মৃত আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করেন।

“আমরা অনুরোধ করে পুলিশকে বলি, আমার স্বামী দিনমজুরি করে সংসার চালায়। তার নামে কোনো মামলা নেই। তবু পুলিশ তাকে নিয়ে যায়। এখন পুলিশের ভুলেই আমার স্বামী দোষ না করেও জেল খাটছে।”

পরে পুলিশ তাকে আদালতে পাঠায়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। সেই থেকে আজিজ কারাগারে রয়েছেন।

এলাকাবাসী বলেন, আসামি আজিজের বর্তমান বয়স প্রায় ৪০ হলেও গ্রেপ্তার আব্দুল আজিজের বয়স প্রায় ৬০ বছর। আসামি আব্দুল আজিজের বাবা আহাদ আলী কারিগর জীবিত। গ্রেপ্তার আব্দুল আজিজের বাবা আহাদ আলী দফাদার মারা গেছেন।

তবে এএসআই আজাদ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এএসআই আজাদ বলেন, “ওয়ারেন্ট এবং ওই ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তিনিই স্বীকার করেছেন তার নামে একটি মামলা ছিল যা তিনি মিটিয়ে ফেলেছেন। গ্রেপ্তারের সময়ও তার পরিবার বলেনি যে সে মামালার আসামি না।

“গ্রেপ্তার আজিজ যদি মামলার আসামি না হন তাহলে তাকে আদালতে প্রমাণ করতে হবে। নাম-ঠিকানায় মিল থাকার কারণে আমাদের কিছুই করার নেই।”

এ বিষয়ে আসামি আজিজের আইনজীবী শাহিনুর রহমান বলেন, ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর রাতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের লোহিতমোহন সাহার ছেলে নবকুমার সাহার বাড়িতে ডাকাতি হয়। এ ঘটনায় ওইবছর ২৩ অক্টোবর নবকুমার অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাঘারপাড়া থানায় মামলা করেন। ২০১১ সালের ৩০ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাজী আব্দুল কাইয়ুম নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

“সেখানে ৭ নম্বর আসামি করা হয় চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজকে। অভিযোগপত্রে এই আজিজের বয়স উল্লেখ করা হয় ৩০ বছর। মামলাটির বিচার চলছে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। পুলিশ আসামি আজিজকে গ্রেপ্তার করে। গত ৫ মার্চ তিনি জামিনে মুক্তি পান।”

আইনজীবী শাহিনুর বলেন, “সম্প্রতি আসামি আজিজ আদালতে হাজিরা দেননি। এ কারণে ৭ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এই পরোয়ানার ভিত্তিতে গত ৯ ডিসেম্বর রাতে চৌগাছা থানার এএসআই আজাদ প্রকৃত আসামি আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজকে বাদ দিয়ে মৃত আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠান।

“জজ আদালতে অবকাশকালীন ছুটি থাকায় হাকিম আদালত আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আজিজকে কারাগারে পাঠিয়েছে। এরপর থেকে আজিজ রয়েছেন।”