আওয়ামী লীগে অতিথি পাখির স্থান নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের ভেতর সুসময়ের সুবিধাবাদী ও খারাপ লোকদের ব্যাপারে নেতকর্মীদের সতর্ক করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2019, 04:00 PM
Updated : 8 Dec 2019, 04:03 PM

রোববার বরিশালে দলের সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “দলের সুসময়ে শীতের পাখিরা আসবে, দুঃসময়ে আবার পালিয়ে যাবে। এমন অতিথি পাখিদের আওয়ামী লীগে স্থান নেই।”

আওয়ামী লীগ ত্যাগী কর্মীদের দল উল্লেখ করে তিনি এখানে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও ভূমি দস্যুদের স্থান নেই বলে জানিয়ে দেন।

রোববার বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন ওবায়দুল কাদের।

বেলা সোয়া ১১টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা। এরপর বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগে সুবিধাবাদী ও খারাপ লোকের দরকার নেই। কারণ তারা দলে ভিড়ে সব অর্জন উইপোকার মতো খেয়ে ফেলবে। ত্যাগী কর্মীদের কোণঠাসা করলে আওয়ামী লীগ মারা যাবে। তাই আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হলে ত্যাগী কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।

আর বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে বারবার ক্ষমতার মঞ্চে বসাতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

বিএনপির সমালোচনা করতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ দল বিএনপি। তারা ব্যর্থ হয়ে এখন দেশের বিরুদ্ধে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে বেড়াচ্ছে। বিএপির বর্তমান নাম ‘বাংলাদেশ নালিশ পার্টি’।

“বিএনপিতে নেতা নেই, তাই এই দলকে নিয়ে বিচলিত হওয়ারও কিছু নেই” মন্তব্য করে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, “দলের মধ্যে বিভেদ ও কলহ করবেন না। ঘরের মধ্যে ঘর করবেন না। মশারির মধ্যে মশারি খাটাবেন না।”

তিনি মনে করিয়ে দেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন হয়। ভোলা-বরিশাল সেতুর নির্মাণ কাজের প্রাথমিক পর্যালোচনা শেষ হয়েছে। পায়রা বন্দরসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

কিন্তু বিএনপির আমলে দক্ষিণাঞ্চল সবচেয়ে সুবিধা বঞ্চিত ছিল দাবি করে কাদের বলেন, “বিএনপি হওয়া ভবন বানিয়ে দেশকে দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন করেছে।”

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীয় সদস্য আমির হোসেন আমু। প্রধান বক্তা ছিলেন বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীয় সদস্য হাফিজ মল্লিক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, গণপূর্ত মন্ত্রী স ম রেজাউল করিম, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী ইসলাম ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল।

বিকাল ৪টায় বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশনে ৩৭১ জন কাউন্সিলর ছিলেন।

তবে শেষ পর্যন্ত সমঝোতার মাধ্যমে একেএম জাহাঙ্গীরকে সভাপতি ও সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সাধারণ সম্পাদক করে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়।