জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চিতারবাজার বণিক সমিতির সহ-সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নামে এসব ঘুষের টাকা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
“টাকা না দিলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ইচ্ছামতো বিদ্যুৎ খুঁটি স্থাপন করে চলে যায়। যে কারণে বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী তাদের টাকা দিচ্ছে।”
এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান বলেন, “এমনটি যে হচ্ছে না তা নয়।”
“এর সাথে স্থানীয় লোকেরাই বেশি জড়িত। তারা আমাদের সাইনবোর্ড করে এভাবে টাকা পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।”
বিদ্যুৎ সংযোগ বা খুঁটি স্থাপনের জন্য ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে কোনো টাকা দিতে হয় না বলেও জানান তিনি।
এর মধ্যে বোয়ালমারী উপজেলার চিতারবাজার এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ইউআরআইডিএস প্রকল্পের আওতায় কাজ করছে মেসার্স মির্জা আবু বকর নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
বোয়ালমারীর দাদপুর ইউনিয়নের চিতারপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোহসিন মোল্যা অভিযোগ করেন, ওই প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার আব্দুর রাজ্জাক ও ফোরম্যান আল আমীন তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উপর দিয়ে টানানো তার সরানোর জন্য ‘৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন।’
“সেই টাকা না দেওয়ায় তারা ইচ্ছাকৃতভাবে সঞ্চালন লাইনের তার কেটে ঝুলিয়ে রাখে। পরে বিদ্যুতের সংযোগ দিলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি পাটের গুদামে আগুন লেগে যায়।”
এতে তার দোকানসহ ভাড়াটিয়াদের এক কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
চিতারবাজারের এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দেওয়া প্রতিবেদনে ফরিদপুরের ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক এবিএম মমতাজউদ্দিন বলেছেন, “ঠিকাদারের কাজের সময় অসর্তকতার কারণে তার ছেড়া অবস্থায় ছিল, পরে লাইন দিলে আগুন লাগে।”
জেলার চিতারবাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জামালউদ্দিন বলেন, ঘুষের টাকা না দেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই এ আগুন লাগিয়েছে তারা।
ওই বাজারের রাকিবুল ইসলাম বতু, আমিন বিশ্বাস, বাবুল বিশ্বাসহ অনেকের কাছেও বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনের কথা বলে টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ওই অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ পেয়ে পল্লী বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও করেছে প্রশাসন।
এ ঘটনায় সপ্তাহখানের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে পারবেন বলে আশা করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান।
তবে এ ব্যাপারে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সুপারবাইজার আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইলফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা হলেও সম্ভব হয়নি।