শার্শায় শীতের সবজির ফলন ‘ভালো’, দামে খুশি কৃষক

যশোরের শার্শা উপজেলায় শীতের সবজির বাম্পার ফলনের সঙ্গে ভালো দাম ও চাহিদার কারণে এ অঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Dec 2019, 06:02 AM
Updated : 6 Dec 2019, 06:02 AM

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ১৬২৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও পাঁচ হাজার চাষি ১৬৫০ হেক্টর জমিতে শীতের সবজি আবাদ করেছেন।

আর গত বছর ১৫৫০ হেক্টর জমিতে শীতের সবজির আবাদ করা হয়েছিল বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা। 

তিনি বলেন, ঘূর্নিঝড় বুলবুলের সময়ও সবজির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। সব মিলিয়ে এ বছর শীতের সবজির ভালো ফলন হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও বাজার ঘুরে তরতাজা লাউ, কুমড়া, শিম, বেগুন, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, লাল শাক, মূলা শাক, পালং শাক, টমেটো, গাজর, পটল, কয়েক প্রকারের কচু, ঢেঁড়স, বরবটি, চিচিংগা, শিম, উচ্ছে, করলা, বেগুন, মরিচ ও পেঁপেসহ বিভিন্ন ধরণের তরতাজা সবজি দেখা গেছে।

বাগআচড়া, নাভারন ও বেনাপোল বাজারে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সবজি আহরণ ও বেচাকেনায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।

শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তরুণ কুমার বালা বলেন, শার্শায় ২৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন, ৩৮০ হেক্টরে মিষ্টি কুমড়া, ৩২৫ হেক্টরে পটল, ২৫০ হেক্টরে কপি, ১৭০ হেক্টরে লাল শাক ও পালং শাক ও ৬৫ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। 

যদুনাথপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা ৫০ শতাংশ জমিতে কপি চাষ করেছেন। এতে সার, বীজ ও অন্যান্য মিলিয়ে তার প্রায় ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

এ মৌসুমে প্রায় লাখ টাকার কপি বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা মোস্তাফার।

উত্তর বারোপোতা গ্রামের উজ্জ্বল আলী বলেন, এ বছর ১৫ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। পোকায় বেগুন নষ্ট করে দেয় বলে নিয়মিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।

এবার কীটনাশক ‘কম ব্যবহার’ করে ‘ব্যাগিং’ পদ্ধতিতে সুফল পেয়েছেন বলে জানালেন এ কৃষক।

উজ্জ্বল বলেন, “ব্যাগিং পদ্ধতিতে পোকার আক্রমণ নেই। এখন আর বাজারে বেগুনের ব্যাপক চাহিদা এবং ভালো দামে আমি খুশি।”

কাঠুরিয়া গ্রামের কবির হোসেন জানান, অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ৪০ শতাংশ জমিতে শুধু লাউ চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এরই মধ্যে তিনি প্রায় ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন।

“সারা বছর সবজি চাষ করলেও শীতের সবজির গুরুত্ব অন্যরকম। এ সময় অনেক রকম সবজির চাষ করা যায়। বাজারে আগাম সবজি সরবরাহ করতে পারলে ভালো লাভও হয়।” বলেন কবির।

নাভারন বাজারের আড়ৎদার মনির হোসেন টিক্কা বলেন, শীতের সবজিতে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। কিছুদিন আগেও দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে ছিল। সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে। এতে ক্রেতারা খুশি।

ওই এলাকা থেকে দৈনিক অন্তত ২০ ট্রাক সবজি ঢাকায় যাচ্ছে বলে তিনি জানান।