ছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি, হয়ে গেলেন আওয়ামী লীগের সম্পাদক

জামালপুরের ইসলামপুরের একটি ইউনিয়নে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি থেকে এক ব্যক্তির ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়ে যাওয়া নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।

জামালপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Dec 2019, 06:25 PM
Updated : 4 Dec 2019, 06:27 PM

অনুপ্রবেশকারীদের স্থান আওয়ামী লীগে হবে না- ক্ষমতাসীন দলটির কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে নেতাদের একথা বলার মধ্যেই ইসলামপুরের এই ঘটনা প্রকাশ পেল।

গত ২৯ নভেম্বর ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে চরপুটিমারি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মো. নেদা মণ্ডল। তিনি আগে ওই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন।

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মজদুল আকন্দ অভিযোগ করেছেন, কাউন্সিলে ‘দুর্নীতি’ করে তাকে বাদ দিয়ে নেদা মণ্ডলকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মজদুল ইতোমধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে নালিশ জানিয়ে লিখিত অভিযোগও করেছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে ব্যক্তি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে আওয়ামী পরিবারগুলোর ওপর নির্যাতনসহ নানাভাবে হয়রানি করেছে, সেই নেদা মণ্ডলকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

“যারা জেল, জুলুম, হুলিয়া মাথায় নিয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে, নানা নির্যাতনের শিকার হয়েছে, এসব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন কমিটিতে বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের স্থান দেওয়া হয়েছে।”

নেদা মণ্ডল দাবি করছেন, তিনি আগে বিএনপি করলেও সেই দলের পদ ছেড়েই আওয়ামী লীগের পদ নিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্বে ছিলাম। এক বছর আগে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করি। এখন আমি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।”

নেদা মণ্ডলকে পদ দেওয়ার বিষয়ে চরপুটিমারি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের  সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান সুরুজ মাস্টার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নেদা মণ্ডল খুব ভালো লোক, সৎ লোক। তাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়ায় আওয়ামী লীগ চাঙ্গা হয়েছে। তাকে ডাকলেই পাওয়া যায়।”

দুর্নীতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, “আমি বা আমরা কোনো টাকার বিনিময়ে কমিটি অনুমোদন করিনি।

“উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই মাস আগে তিনি (নেদা) আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের ভোট বৃদ্ধির জন্যই এই পদে তাকে চেয়েছিলাম।”

তবে বিএনপি থেকে আসা নেদাকে পদ দেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান জানান জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এটা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী। অন্য কোনো দল থেকে এসেই আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ার কোনো সুযোগ নাই। জেলা আওয়ামী লীগের পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”