তবে শিশুটিকে যিনি উদ্ধার করেছেন, সেই আয়েশা বেগম নিজেই ছেলেটিকে দত্তক নিতে চান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ইউএনও স্যারের কাছে আমার অনুরোধ, তিনি যেন বাচ্চাটাকে ঢাকায় না পাঠিয়ে এখান থেকেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে আমাকে দিয়ে দেন। আমি ইউএনও স্যারের কাছে ওরে ভিক্ষা চাই।”
নবাবগঞ্জ উপজেলার টিকরপুর গ্রামের আয়েশা বেগম (৫৫) গত রোববার দুপুরে গ্রামের এক বাড়ির পাশে ঝোপের মধ্যে চাদর ও ওড়না পেঁচানো অবস্থায় বাচ্চাটিকে খুঁজে পান।
শিশুটি এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে জানিয়ে নবাবগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন মনজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকায় সরকারি শিশুসেবা কেন্দ্র থেকে যারা আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে দত্তক নিতে পারবেন তারাই শিশুটির দায়িত্ব নিতে পাবেন। এখানে অন্য কোনো পথ নেই।
“তবে যিনি (আয়েশা বেগম) শিশুটিকে পেয়েছেন, তিনি যদি আইনি প্রক্রিয়ায় শিশুটিকে পেতে আবেদন করেন, তাহলে আমি তাদের পক্ষে সুপারিশ করব।”
আয়েশা বেগম বলছেন, তার তিন সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে মনোয়ারার (৩০) বিয়ে হয়েছে নয় বছর আগে। সন্তান না হওয়ায় অনেক চিকিৎসা করিয়েছেন, কিন্তু ফল পাননি। মনোয়ারার জন্যই তিনি শিশুটিকে দত্তক চান।
মনোয়ারা নিজেও সোমবার ঢাকা থেকে এসে হাসপাতালে শিশুটির দেখভাল করা শুরু করেছে।
“ওই কথা শুনে আমি বাচ্চা নিয়ে তাদের সঙ্গে হাসপাতালে আসছি। এখন বাচ্চাটা সুস্থ, কিন্তু হাসপাতাল থেকে আমাদের ছাড়ছে না।”
শিশুটির জন্য দুধ, ফিডার , পোশাকসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তিনিই কিনে দিয়েছেন জানিয়ে আয়েশা বেগম বলেন, “কেউ আমাকে এক টাকা দিয়েও সহযোগিতা করেনি। এমনকি হাসপাতাল থেকেও আমাকে একবেলা খাবার দেয়নি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি নিঃসন্তান দম্পতি শিশুটিকে দত্তক নিতে হাসপাতালে এসেছিলেন। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন এখান থেকে কাউকে দিতে পারে না।
শিশুটিকে ঢাকার ‘আজিমপুর ছোটমনি নিবাস’-এ পাঠানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা শিশুটিকে পেয়েছেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের হাতেই বাচ্চাটাকে দেওয়া যেতে পারে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।”