রাবিতে পরীক্ষায় ‘জালিয়াতি’: ভর্তি হননি সেই ছাত্র

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সি (বিজ্ঞান) ইউনিটে অ-বিজ্ঞান শাখায় মানবিকে প্রথম হওয়া মো. হাসিবুর রহমান শেষ পর্যন্ত ভর্তি হতে আসেননি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2019, 03:00 PM
Updated : 3 Dec 2019, 03:00 PM

পরীক্ষায় জালিয়াতি করেছেন সন্দেহ করা হলে তাকে যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এরপর থেকে তিনি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে না আসায় তা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার চিফ কো-অর্ডিনেটর ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. একরামুল হামিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত রোববার (১ ডিসেম্বর) সি ইউনিটের প্রথম মেধা তালিকায় থাকাদের ভর্তি কার্যক্রমের সময়সীমা শেষ হয়েছে।

হাসিব তার সংশ্লিষ্ট এ ইউনিটে (মানবিক, রোল ৫৪২৩৩) গ্রুপ-২ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এমসিকিউয়ে মাত্র ২০ নম্বর পান। অন্যদিকে সি ইউনিটের অ-বিজ্ঞান স্ট্রিমে (রোল-৮০৩১৮) অংশ নিয়ে এমসিকিউয়ে ৬০ এর মধ্যে ৫৪ ও লিখিততে ৪০ এ ২৬ নম্বরসহ ৮০ পেয়ে প্রথম হন।

ফলাফলে এমন অবিশ্বাস্য অসঙ্গতি কর্তৃপক্ষের নজরে এলে ২৫ নভেম্বর ভর্তি হতে আসা হাসিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং পরদিন তাকে ‘ঠান্ডা মাথায়’ চিন্তা করে আসতে বলা হয়। কিন্তু পরদিন তিনি না আসায় ‘জালিয়াতি সন্দেহে’ গত ২৮ নভেম্বর তার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।

অধ্যাপক একরামুল হামিদ বলেন, তারা হাসিবের দুই ইউনিটের পরীক্ষার খাতা মিলিয়ে দেখে তাতে অসঙ্গতি পেয়েছেন। হাসিব ভর্তি হতে না আসায় ডিনরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন বিষয়টি প্রশাসনে হস্তান্তর করার। পরে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রসহ ফরোয়ার্ডিং লেটারের মাধ্যমে উপাচার্যকে জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, “হাসিবের হয়ে অন্য কেউ ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছিল বলে তার পরিবার স্বীকার করে নিয়েছে।”

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে হাসিবের মা ওয়ালিফা বেগম বলেন, “আমি হাসিবের সঙ্গে ডিন অফিসে গিয়েছিলাম প্রথম দিন। তারা হাসিবের লেখায় গড়মিল পেয়েছেন বলে জানান। আরও অনেক ঝামেলার কথা বলায় আমরা হাসিবকে ভর্তি করাইনি।”

ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে যুক্ত একাধিক শিক্ষক বলেন, বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতিতে প্রক্সি দেওয়া এবং পরীক্ষার হলে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা অসম্ভব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক খাদেমুল ইসলাম মোল্লাও বলছেন, “এটা (আইসিটি) সিস্টেমের এরর নয়, হিউম্যান এরর। বর্তমান পদ্ধতিতে কোনোভাবেই প্রক্সি দেওয়া সম্ভব নয়। তবে হল পরিদর্শক যদি কোনো কারণে সঠিক দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে এটা হতে পারে।”

ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত একাধিক শিক্ষক বলেন, একজন ভর্তিচ্ছু একই ধারার প্রশ্নপত্রে ফেল করছে, অন্য ইউনিটে প্রথম হচ্ছে। এটা অবশ্যই সন্দেহের। আবার যদি কেউ প্রক্সি দিয়েই থাকে, তার পক্ষেও অজানা প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে ৮০ নম্বর পাওয়া কঠিন। তাহলে যে অপশন থাকে তা হলো পরীক্ষার আগেই প্রশ্ন পেয়ে যাওয়া।

সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আব্দুস সোবহানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।