কুষ্টিয়ায় দুই ভাই হত্যায় ৪ জনের প্রাণদণ্ড

নাতনিকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এক স্কুলশিক্ষক এবং তার ভাইকে হত্যার ঘটনায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।

কুষ্টিয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2019, 05:42 AM
Updated : 1 Dec 2019, 10:26 AM

এ মামলার অপর সাত আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং একজনবে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।

রোববার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান তিন বছর আগের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

সর্বোচ্চ সাজার আদেশ পাওয়া চার আসামি হলেন- ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামাণিকের ছেলে কামরুল প্রামাণিক ও সুমন প্রামাণিক এবং একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন শেখ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আসামিরা হলেন- উপজেলার ফকিরাবাদ গ্রামের ছের আলী শেখের ছেলে নজরুল শেখ ও আব্দুর রহিম ওরফে লালিম শেখ, একই গ্রামের আকুল মণ্ডলের ছেলে মাহফুজুর রহমান ওরফে কবি, বেনজীর প্রামাণিকের ছেলে হৃদয় আলী, নাজির প্রামাণিকের ছেলে সম্রাট আলী প্রামাণিক, গোলাপনগর গ্রামের নুরুল হক মালিথার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম  ও আশরাফ মালিথা।

এছাড়া উত্ত্যক্তকারী আরিফ মালিথা ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন (বর্তমানে বয়স ১৯ বছর) বলে তাকে ১০ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

দণ্ডিত আসামিদের সবাইকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত। ১২ আসামির মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নয়ন শেখ এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হৃদয় আলী ও সম্রাট আলী পলাতক।

মামলার বিবরণে জানা যায়,  ভেড়ামারার ফকিরাবাদ সদরপাড়ার আশরাফুজ্জামান রতনের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত ওই এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে আরিফ মালিথা। মেয়েটির পরিবারের সদস্যরা এর প্রতিবাদ করলে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এর জের ধরে ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে রতনের বাবা এবং দুই চাচার ওপর পরানখালী রাস্তার ওপর হামলা করে আসামিরা। তাদের ধারালো অস্ত্রের কোপে রতনের বাবা মুজিবর রহমান মাস্টার ঘটনাস্থলেই মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান চাচা মিজানুর রহমান।

ওই ঘটনায় রতনের ভাই জাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় এই হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ১২ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হালিম এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

আর মামলার বাদী জাহারুল ইসলাম আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, “এই রায়ে ন্যায়বিচার পেয়েছি, অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক, তারা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, আদালতে তা প্রমাণ হয়েছে।”