সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এম এ বারী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়।
ওই দুই ছাত্রলীগ কর্মী হলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম (আসিফ লাক) ও বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের হুমায়ূন কবির নাহিদ।
ল্যাপটপ চুরির অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে ‘ছাত্রলীগ কর্মীরা’ ফাইন্যান্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেনকে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, ১৫ নভেম্বর রাতে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ঘটনার প্রেক্ষিতে মো. রাকিবুল ইসলাম ও মো. হুমায়ূন কবির নাহিদকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।
এদিকে, এই ঘটনা তদন্তে শনিবার ব্যবসায় অনুষদের ডিন হুমায়ুন কবীরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটির সদস্য সচিব রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। সদস্যরা হলেন সিন্ডিকেট সদস্য আব্দুলাহ আল মামুন, শহীদ শামসুজ্জোহা হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জুলকার নাইন ও সহকারী প্রক্টর হাসানুর রহমান।
অধ্যাপক লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, “সাময়িক বহিষ্কারের পর উপাচার্য একটি কমিটি করে দিয়েছেন।”
স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, “স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কিছু পর্যায় রয়েছে, যেগুলো অতিক্রম না করে এ সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব নয়। মারধরের বিষয়ে যে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তার রিপোর্ট পাবার পর স্থায়ী বহিষ্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তবে কত কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানেন না বলে প্রক্টর জানান।
মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, “আমরা যতদূর জানতে পেরেছি, তারা দুজন রাজশাহীর বাইরে রয়েছেন। তাদেরকে খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে।”
এদিকে, ছাত্রলীগের গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু রোববার রাতে বলেছিলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তদন্ত প্রতিবেদন দপ্তর সম্পাদকের কাছে দিয়েছে কমিটি। সভাপতির (গোলাম কিবরিয়া) সঙ্গে কথা বলে রাতেই জানানো হবে।”
সোমবার দুপুরে ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এ বিষয়ে বলেন, “এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলব।”
সোহরাবের মামলায় অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা হলে ছাত্রলীগকর্মী রাকিবুল ইসলাম (আসিফ লাক) ও হুমায়ূন কবির নাহিদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সোহরাবকে ল্যাপটপ ছুরির অভিযোগে হলের তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নম্বর কক্ষে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে তারা সোহরাবকে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন।
সোহরাবের সহপাঠী জুবায়ের হোসেন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে সোমবার বলেন, “ সোহরাব এখন বিপদমুক্ত। তবে কথা বলতে গেলে মাথায় ব্যথা পাচ্ছে। আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে।”