সরেজমিনে সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্র নদের বিভিন্ন চরে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে কথা বললে তারা তাদের দুশ্চিন্তা ও অভিযোগের কথা জানান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে।
ডাকপাড়া চরের চাষি আব্দুল আজিদ বলেন, “আগাম গোলবেগুন দুই হাজার টেহা মণ দরে বেচা ধরছি। অহন বাজারে প্রতিমণ বেগুনের দাম ১৬০০ টেহা। এ সময় ধরন্ত বেগুন গাছে এবং বেগুনে পচন ধরছে।”
তিনি ১০ বিঘা জমিতে প্রায় আট লাখ টাকা খরচ করে বেগুন আবাদ করেছেন বলে জানান।
“অহন গাছে ও বেগুনে পচন ধরল। বিষ দিয়াও কাজ অইতাছে না। অহন চিন্তার মধ্যে আছি। কৃষি বিভাগের কেউ আমাগরে পরামর্শ দেওয়ার জন্য অহনতরি আহে নাই।”
একই এলাকার আশকর আলী দুই লাখ টাকা খরচ করে কয়েক বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন।
উজ্জ্বল মিয়া ধারদেনা করে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে সাত বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করেছেন জানিয়ে বলেন, এখন পর্যন্ত তিনি মাত্র ৫০ হাজার টাকার বেগুন বেচতে পেরেছেন।
“অহন বেগুনক্ষেতে পঁন রোগ দেখা দিছে। চিন্তাই পইরা গেছি গা।”
বেগুন চাষি হামিদুর রহমানেরও অভিজ্ঞতা একই রকম।
“আল্লাহর রহমতে বেগুন ভাল অইছে। গাছও সুন্দর অইছে। চার পাখি জমিতে পৌনে দুই লাখ টেহা খরচ কইরা বেগুন করছি। এ পর্যন্ত ৩০-৩৫ হাজার টেহার বেগুন বেচছি। মাঝে মাঝে বেগুন গাছে পচন ধরছে। কৃষি অফিসারদের অহনও চর এলাকায় আইতে দেহি নাই।”
তিনি ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে বেগুন কিনে ট্রাকে করে ঢাকা পাঠান বলে জানান।
বেগুনক্ষেতে কাজ করেন ওই এলাকার কৃষিশ্রমিক মেরাজ উদ্দিন।
তিনি বলেন, “কার্তিক মাসে আমগরে তেমন কামকাইজ থাহে না। চাষিরা এলাকায় বেগুন করায় আমরা গরিব মানুষ কাজ করতাছি। মজুরি দৈনিক ৫০০ টাকা। সংসার বালাই চলতাছে।”
কৃষি শ্রমিক আব্দুর রশীদও তাদের দিনকাল ‘বালাই চলতাছে’ বলে জানালেন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, গোলবেগুনের আবাদ দিন দিন বাড়ছে। আগাম চাষ হওয়ায় চাষিরা দাম বেশি পাচ্ছে।
“এতে সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছি। কৃষিকর্মীরা যাতে ঘন ঘন এলাকায় যান সেজন্য তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”