মাজার জিয়ারত শেষে ৩ জন ফিরল লাশ হয়ে

শরীয়তপুর থেকে পরিবারের সদস্যরা মিলে গিয়েছিলেন সিলেটে শাহজালালের মাজার জিয়ারতে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে সেদিন ফেরেননি; থেকে গিয়েছিলেন এক স্বজনের বাড়িতে। অবশেষে ফেরার পথে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত হলেন সেই পরিবারের তিন নারী-শিশু।

কে এম রায়হান কবীর শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2019, 02:56 PM
Updated : 13 Nov 2019, 02:56 PM

মঙ্গলবার ভোররাতে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবায় ট্রেন দুর্ঘটনায় এই পরিবারের নিহতরা হলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলার আরশিনগর ইউনিয়নের মাদবর কান্দির বাসিন্দা অলু হাওলাদারের মেয়ে কাকলী বেগম (২২), পার্শ্ববর্তী জালালপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কাকলী বেগমের মামী শাশুড়ি আমাতন বেগম (৪৫) এবং আমাতন বেগমের মেয়ে মরিয়ম (৪)।

এছাড়া এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কাকলী বেগমের মেয়ে মাহিমা (৩), শাশুড়ি রাহিমা বেগম (৪৫), মামা শ্বশুর জাহাঙ্গীর মিয়া (৫০)। তারা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

মাহিমা রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সখিপুর থানার ওসি মো. এনামুল হক।

কাকলীর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত বুধবার সিলেটের হযরত শাহাজালাল (র.)-এর মাজার জিয়ারতের জন্য বাড়ি থেকে বের হন কাকলী, তার মেয়ে, শাশুড়ি, মামা শ্বশুর, মামী শাশুড়ি ও মামা শ্বশুরের মেয়ে মরিয়ম।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে ওইদিন ফিরতে না পারায় সিলেটে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তারা। সেখানে চারদিন থাকার পর সোমবার রাতে ট্রেনে ওঠেন বাড়ির উদ্দেশ্যে।

তাদের বহনকারী ট্রেন উদয়ন এক্সপ্রেসের সঙ্গে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ রেল ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার সংঘর্ষ হয়।

এ সময় ঘটনাস্থলেই কাকলী বেগম, আমাতন বেগম ও মরিয়মের মৃত্যু হয় বলে কাকলীর বড় ভাই ফরিদ মুন্সি জানান।

ফরিদ মুন্সি বলেন, দূর্ঘটনার পর কাকলীর শ্বশুরের ফোনে কারা যেন ফোন করে বিষয়টি বাড়িতে জানায়।

“পরে আমি ঢাকা থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় সেখানে যাই এবং কাকলী ও অন্যদের লাশ শনাক্ত করি।

“এ সময় কাকলী সাথে থাকা আহত স্বজনদের ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদেরকে ঢাকা পাঠানো হয়। বুধবার সকালে কাকলী ও অন্যদের লাশ গ্রামের বাড়িতে এনে আমরা দাফন করি।”

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আল নাফিস বলেন, “ঘটনাটি আমরা জানতে পেরেছি। কাকলীর পরিবার যদি হতদরিদ্র হয় তবে উপজেলা প্রশাসন অবশ্যই তাদের পাশে থাকবে।”

এদিকে, এই পরিবারের আহতদের যাবতীয় চিকিৎসার ভার শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য ও আরশি নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সামচুজ্জোহা রতন।