শাবিতে ভর্তি হতে গিয়ে জালিয়াতির অভিযোগে আটক ৫

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে আসা পাঁচ শিক্ষার্থীকে জালিয়াতি করে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার অভিযোগে আটক করা হয়েছে।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2019, 04:30 AM
Updated : 13 Nov 2019, 04:30 AM

আর ‘জালিয়াতিতে’ তাদের সহযোগিতা করার অভিযোগে আটক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে।

প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমেদ জানান, মঙ্গলবার ‘বি-১’ ইউনিটের বিজ্ঞান শাখায় ভর্তি হতে এলে ওই শিক্ষার্থীদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।

এরা হলেন- বগুড়া জেলার বৃন্দাবন পাড়ার আরিফ খান রাফি, শাহজানপুর উপজেলার মাঝিরা গ্রামের শাকিদুল ইসলাম, রহিমাবাদ গ্রামের আবিদ মুর্শেদ, বটতলার জাহিদ হাসান এবং রংপুর জেলার পাকমোড়ের রিয়াদুল জান্নাত।

তাদের জলিয়াতিতে সহযোগিতা করার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগের প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্র সামিউল ইসলাম কৌশিককেও আটক করা হয়েছে।

প্রক্টর বলেন, “এরা সবাই বগুড়াকেন্দ্রিক একটি চক্রের সঙ্গে ৫/৭ লাখ টাকার চুক্তি করে জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে, সেও জালিয়াতির মাধ্যমেই ভর্তি হয়েছিল বলে আমরা ধারণা করছি।”

কী ধরনের জালিয়াতি হয়েছিল জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ওই পাঁচ ভর্তিচ্ছুর সবাই প্রশ্নপত্রের সেট কোড ‘ওভার রাইট’ করে ৭৫ নম্বর সেট কোডের প্রশ্নপত্র অনুযায়ী বৃত্ত ভরাট করেছিল।

“উত্তরপত্রে সেট কোডের জায়গায় ওভার রাইটিং, অভিন্ন সেট কোডে উত্তর এবং প্রাপ্ত নম্বর কাছাকাছি দেখে সন্দেহ হওয়ায় আমরা তাদের সনাক্ত করে রেখেছিলাম। ভর্তি হতে এলে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের তিনজন জালিয়াতির কথা স্বীকার করে।”

গত ২৬ অক্টোবর সকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিট এবং বিকালে ‘বি’ ও ‘বি-১’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা নেওয়া হয় ক্যাম্পাসসহ সিলেট শহরের ৪৩টি কেন্দ্রে।

সেদিনও পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে চারটি কেন্দ্র থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছিল। তারাও ৭৫ নম্বর সেট কোডের প্রশ্নপত্র অনুযায়ী উত্তরপত্রে বৃত্ত ভরাট করেছিলেন।

ওই পাঁচজনের মধ্যে আহসান আলী, ইব্রাহিম খলিল জীবন, মাহমুদুল হাসান ও সাদ মো. শাহেল পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন বগুড়া থেকে। আর মোহাইমিনুল ইসলাম খান নামে আরেকজন ময়মনসিংহ থেকে এসেছিলেন।

তাদের কাছে এক ধরনের নতুন ডিভাইস পাওয়া গিয়েছিল, যাতে মোবাইল ফোনের সিম লাগিয়ে হেডফোন দিয়ে বাইরে কথা বলা যায়।

প্রক্টর বলেন, “আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা একই এলকার হওয়ায় এবং একই সেট কোডের প্রশ্নপত্রের বৃত্ত ভরাট করায় মনে হচ্ছে এরা একই চক্রে যুক্ত।”

তাহলে ৭৫ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র ফাঁস হল কীভাবে- এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, “এটা তদন্তের বিষয়।”

এর আগে ২০১৭-১৮ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির দায়ে টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলার দুই শিক্ষার্থীকে এবং ২০১৮-১৯ সেশনের ভর্তি পরীক্ষায় বগুড়ার দুই শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল ডিভাইসসহ আটক হয়েছিল।

বিগত কয়েক বছরে জালিয়াতির দায়ে আটক হওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী বগুড়া বা কাছাকাছি জেলার হওয়ায় একটি নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক চক্র কাজ করছে বলে ধারণা করছেন প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমেদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবে।