সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোমেন শর্মা জানান, তাদের বেদখলকারীর তালিকায় ৩০ জনের মধ্যে ভালুক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম মোস্তুফার নাম রয়েছে।
“তার দখলে রয়েছে এক একর ২৩ শতাংশ জমি। বাউন্ডারি দেওয়া ওই জায়গার মধ্যে দুইটি টিনের ঘরও বানানো হয়েছে।”
এছাড়া ওই তালিকায় রয়েছেন ভালুকা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এজাজুল হক পারুল এবং উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকারেরও নামও বলে জানান ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক।
ভালুকার কাঁঠালী মৌজায় ২৭৩ নম্বর দাগে বনের ১৭ একর ৪০ শতাংশ জমি প্রভাবশালীরা বেদখল করে রেখেছে বলেও জানান তিনি।
“তারা ভূমিদুস্য ছাড়া আর কিছুই না।”
স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু বলেন, “যে যত বড়ই নেতা হোক না কেন কারো সরকারি জায়গা দখল করে রাখার সুযোগ নেই।
“আমি আশা করছি দখলদাররা স্বেচ্ছায় বনের জায়গা খালি করে দেবে।”
এদিকে অভিযুক্তরা কেউ ওই জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন আবার কেউ দাবি করছেন তারা বৈধভাবে জমি কিনেছেন।
ভালুকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম মোস্তুফা জানান, ২০১২ সালের দিকে তার ছেলে সোহাগ সেখানে কিছু জায়গা কেনেন যেখানে বাউন্ডারি নির্মাণ করা হয়েছে।
“পরে শুনতে পেয়েছি সেটি না কি বনের জায়গা। ছেলেকে নিষেধ করেছি বনের জায়গা থাকলে সেখানে যাওয়ার দরকার নেই “
“আমার কাগজপত্রও আছে।“
সেখানে আধাপাকা বাড়ি কেরে ১৫টি রুম ভাড়া দেয় মাসে ১৫ হাজার পান বলে জানান তিনি।
আর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সরকার জানান ১০ বছর আগে ইঞ্জিনিয়ার মকবুল হোসেনের কাছ থেকে তিনি চার শতাংশ জমি কিনলেও তাকে জমি বুঝিয়ে দিতে পারেন নাই।
“তারপর আমিও জমির কোন খোঁজ খবর নিই নাই।”
কামরুল ইসলাম ঢালী নামের ওখাকার জমি ‘দখলকারী’র দাবি ২০১২ সালে ২৭৩ নম্বর দাগে সাত শতাংশ জায়গা হাফিজ উদ্দিন নামে একজনের কাছ কিনেছেন।
“আমার কাছে দলিলও রয়েছে। এখন যদি সরকার আমাদের উচ্ছেদ করে দেয় তাহলে চলে যাব।”
স্থানীয় শরীফ হাসান ও বেলাল হোসেন জানান, যতই দিন যাচ্ছে ততই দখল হচ্ছে হেলিপ্যাডের জায়গা। অনেকে ৩০-৪০ বছর ধরে এখানে ঘর-বাড়ি তৈরি করে বাস করছে।
তবে কবে নাগাদ এ বনভূমির জায়গা বেদখলমুক্ত করা হবে জানতে চাইলে ভালুকা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, সেখানে গড়ে ওঠা ২৫৪টি স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনার জন্য বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে ২০১৪ সালে আবেদন পাঠানো হয়েছে।
আবেদনটি এখনও প্রক্রিয়াধীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ হলেই আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করব।”