বাগেরহাটে বিদ্যুৎ স্বাভাবিকে লাগবে কয়েক দিন

ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের তোড়ে সরবরাহ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় বিদ্যুৎ স্বাভাবিক হতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগবে বলে মনে করছে জেলার পল্লী বিদ্যুৎ।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 07:41 AM
Updated : 11 Nov 2019, 08:12 AM

সোমবার বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন জানান, ঝড়ের কবলে পড়ে এ জেলার ছয় হাজার দুইশ’ কিলোমিটার সরবরাহ লাইনের মধ্যে ৮০৫ কিলোমিটার তার ছিঁড়ে গেছে।

এছাড়া ২০৫টি খুঁটি ও ১২৩টি ‘ক্রস আর্ম’ ভেঙে গেছে এবং ৫০টি ট্রান্সফর্মার ও ১৫০টি পল্লী বিদ্যুতের মিটার নষ্ট হয়েছে বলে জানান তিনি।

ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার থেকে ১২৫ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে শনিবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সাগর দ্বীপ উপকূলে আঘাত হানে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। রোববার ভোরে বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে পৌঁছায় এ ঝড়।

জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা মেরামতে দেড় হাজারের বেশি শ্রমিক রাত-দিন কাজ করছে উল্লেখ করে জাকির হোসেন বলেন,  “সন্ধ্যা নাগাদ বাগেরহাট সদরে শহরের আশপাশের এলাকাগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারব বলে আশা করছি।

“এছাড়া হাসপাতালগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ অগ্রাধীকার ভিত্তিতে নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।”

জেলার পল্লী বিদ্যুতের সরবরাহের মধ্যে শুধুমাত্র ‘মোংলা উপজেলার দিগরাজ ও চাঁদপাই এলাকায় আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ সংযোগ দেওয়া গেছে বলে জানান তিন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শত ভাগ বিদ্যুৎ আনতে আগামী ৪/৫ দিন সময় লাগবে।”

এদিকে বাগেরহাট শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের হাতে।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ারের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুল কুমার স্বর্ণকার বলেন, “বুলবুল ঘুর্ণিঝড়ের আঘাতে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।

দিন-রাত কাজ করে বাগেরহাট পৌর এলাকায় শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে পেরেছেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ আসা-যাওয়ার মধ্যে আছে।”

টানা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের পাশপাশি এ জেলায় মোবাইল নেটওযার্কও ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশিদ জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হওয়ায় জেলার বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।

এ ঝড়ে বাগেরহাটের ৭৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬২টিতে কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। দুর্যোগ কবলিত মানুষের সংখ্যা এক লাখ ৩২ হাজার। ঝড়ে এই জেলায় ৩৫ হাজার ৭৭৫টি ঘরবাড়ি আংশিক এবং আট হাজার ৭৮৮টি বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে রোববার জানানো হয়।