পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজ শুরু করেছে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছে। এছাড়া বিপদ কেটে যাওয়ায় আশ্রয় বেন্দ্র থেকে লোকজন ফিরে যেতে শুরু করেছে।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উপকূল অতিক্রম করার পর সাতক্ষীরায় ঝড়ের দাপট শুরু হয় ভোর পৌনে ৪টার দিকে; প্রবল ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে শুরু হয় ভারী বর্ষণ।
সাতক্ষীরা জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকা অতিক্রম করার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮১ কিলোমিটার। বিপদ কেটে যাওয়ায় ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেতে আনা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জেলায় ২৫ হাজার হেক্টর আমন ধান, ১২ শ হেক্টর জমির সবজি, ৫০০ হেক্টর জমির সরিষা, ২০০ হেক্টরের কুল ও ১২০ হেক্টর জমির পান নষ্ট হওয়ার তথ্য পাওয়ার কথা বলেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অরবিন্দ বিশ্বাস।
এ জেলায় মোট ১ লাখ ৮৫ হাজার মানুষকে ঝড়ের আগে আশ্রয় কেন্দ্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। বিপদ কেটে যাওয়ার পর তাদের অনেকে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজ শুরু করেছে বলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন।
ওই এলাকার কিছু বেঁড়িবাধ ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, “নদীতে পানি বাড়ায় সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে আমরা বাঁধ মেরামত করার চেষ্টা করছি। এখন জোয়ার চলছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে।”
এখন রাস্তায় উপরে পড়া গাছ সরাতে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানান তিনি।
শ্যামনগরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান বলেন, তার এলাকার অধিকাংশ কাঁচা ঘর ঝড়ে নষ্ট হয়েছে। মাছের ঘের ও ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গাছ ভেঙে পড়ে কিছু এলাকায় সড়ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গাছ সরিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা হলেই উদ্ধার কাজ শুরু হবে।
রাতে ঝড়ের মধ্যে গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা গ্রামে আবুল কালাম নামে ৪০ বছর বয়সী এক মাছ চাষী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, “তার মৃত্যুর সাথে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কোনো সম্পর্ক নেই।”
রাস্তার ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে আশাশুনি ও কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকাতেও। শ্যামনগরের খানপুর, চণ্ডিপুর, সদর, উত্তর বাঁধঘাটা, ইসমাইলপুর, হাইবাতপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় বড় বড় গাছ উপড়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গাছ সরাতে কাজ করছেন।