ঘূর্ণিঝড় বুলবুল: অনিচ্ছুকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে মাঠে পুলিশ

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখানো হলেও পটুয়াখালীর ঝুঁকিপূর্ণ অনেক এলাকাবাসী আশ্রয়কেন্দ্রে না আসায় মাঠে নেমেছে পুলিশ।

পটুয়াখালী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Nov 2019, 05:54 AM
Updated : 9 Nov 2019, 05:56 AM

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জেলার কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়ন ও মহিপুরের নিজামপুর এলাকা বেশ ঝুকিপূর্ণ।

বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য সেখানকার জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জনপ্রতিনিধিরা বলার পরেও অনেকে নিজ উদ্যোগে আসছেন না তাই ওই সব এলাকার মানুষদের নিয়ে আসতে আমি পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ করেছি।

“পুলিশ যাচ্ছেন। এলাকাবাসীকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে বাধ্য করা হবে।”

শনিবার সকালে বাগেরহাটের মোংলা ও পটুয়াখালীর পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস।

“অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড় শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘণ্টায় দেড়শ কিলোমিটার বেগের বাতাসের শক্তি নিয়ে বুলবুল সুন্দরবন দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।”

১০ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও সুন্দরবন এলাকায় আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় আইলা। সেই ঝড়ের শক্তি ছিল বুলবুলের মতই।

কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত হোসেন তপন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তার ইউনিয়নে ২৫ হাজার লোকের বসবাস। বেড়িবাঁধ দুর্বল থাকায় এর মধ্যে বেশির ভাগ এলাকার মানুষ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে।

“এদেরকে ইউনিয়ন পরিষদসহ অন্তত ১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে  নিয়ে নিরাপদে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার বিকেল থেকেই বাসিন্দাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য বলা হয়েছে, করা হচ্ছে মাইকিং।

“শনিবার সকাল থেকে আমি নিজে উপস্থিত হয়ে আমার ইউপি সদস্যরা, দফাদার ও চৌকিদাররা তাদেরকে নিয়ে আসার কাজ করছে। ”

শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত লালুয়া ইউনিয়নের পাঁচ শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “সকলকেই নিয়ে আসা হবে। আশ্রয়কেন্দ্রে যদি মানুষ না আসতে চায় তাহলে পুলিশ সদস্যদের সাহায্যে তাদেরকে বাধ্য করা হবে।”

বুলবুলের প্রভাবে জেলার কোথাও দমকা হাওয়া না বইলেও পটুয়াখালীর উপকূল জুড়ে হালকা-মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। জোয়ারের প্রভাবে কুয়াকাটা সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে।

কলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, লালুয়া ইউনিয়নসহ ঝুকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে নিয়ে আসার জন্য পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

“দুপুর ১২টার মধ্যে ঝুকিপুর্ণ এলাকার বাসিন্দদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।”

বুলবুলের যেকোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।