টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকাল থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফলে বৃহস্পতিবার ও এর আগে সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়া অন্তত এক সহস্রাধিক পর্যটক সেখানে আটকা পড়েছেন।
এদিকে মৌসুমী আবহাওয়ার কারণে গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি এখন নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে বলে আবাহওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান জানিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে চলাচলকারি নৌযান সমূহকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আব্দুর রহমান বলেন, “ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেকে ৭১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি শনিবার রাতে বা পরদিন সকালে বাংলাদেশের উত্তরও-পশ্চিম উপকূল দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।”
ইউএনও বলেন,“টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে চলতি পর্যটন মৌসুমে চারটি পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করছে। এসব জাহাজে করে পর্যটকরা সেন্টমার্টিন দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিল। এছাড়া অন্যান্য নৌযান ও চলাচল বন্ধ থাকার কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপের অন্তত আট শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দারাও টেকনাফ থেকে ফিরতে পারেননি। ”
এছাড়া আটকা পড়া পর্যটকদের যাতে কোন ধরণের অসুবিধা ও দুর্ভোগে পড়তে না হয়- এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আটকা পড়া পর্যটকদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, শুক্রবার সকালে আটকা পড়া পর্যটক এবং হোটেল-মোটেগুলোর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। এসব পর্যটকদের কাছ থেকে হোটেল কক্ষের নির্ধারিত মূল্যের অর্ধেক ভাড়া নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া খাবার হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোকেও একই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে আটকা পড়া পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে নিরাপদে অবস্থান করছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “এ নিয়ে শুক্রবার সকালের মধ্যে অধিকাংশ ট্রলার উপকূলে ফিরে এসেছে। এখনো সাগরে ৫ শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার অবস্থান করছে। কোন ধরণের যান্ত্রিক অসুবিধা না হলে এসব ট্রলার শনিবার সকালের আগেই উপকূলে ফিরে আসতে পারবে।”
তবে এখনও পর্যন্ত সাগরে কোন ধরণের ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনার খবর পাননি বলে জেলা ফিশিং বোট সমিতির এ নেতা জানান।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬ পর্যন্ত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি সাগর স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা উত্তাল রয়েছে।