তিন জেলায় গলাকাটা লাশ উদ্ধার

তিন জেলায় তিনটি গলাকাটা মরদেহসহ দেশের নানা স্থান থেকে পাঁচটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2019, 04:05 PM
Updated : 6 Nov 2019, 11:30 AM

শনিবার ও রোববার সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, পঞ্চগড়, নরিসিংদী ও ফরিদপুরে এ পাঁচটি লাশ পাওয়া যায়।

এরমধ্যে পঞ্চগড়, নরিসিংদী ও ফরিদপুরের ব্যক্তিদের গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।  

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের সর্দারপাড়া গ্রামে একটি ধান ক্ষেত থেকে এক গৃহবধূর গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত কল্পনা আক্তার (২৫) ওই গ্রামের মনির হোসেনের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের কাউয়াখাল গ্রামে। তাদের পাঁচ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

পঞ্চগড় সদর ওসি আবু আক্কাস আহমেদ বলেন, রোববার সকালে বাড়ির পাশে একটি ধান ক্ষেত থেকে কল্পনার গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি জানান, ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বামী ও তাদের বাড়ির লোকজন পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

কল্পনার ভাই হযরত আলী বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে কিছুদিন আগে কল্পনা স্বামীর বাড়ি থেকে তাদের বাড়িতে যান। ছয়দিন আগে দুই পরিবারের সমঝোতার মাধ্যমে কল্পনাকে তার স্বামী মনির তাদের বাড়ি নিয়ে যান।

কল্পনাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে তার ভাইয়ের দাবি।

নরসিংদী প্রতিনধি জানান, নরসিংদীর মনোহরদীতে ভাড়া বাসা থেকে মাদ্রাসাশিক্ষক তোফাজ্জল হোসেনের (৩০) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তোফাজ্জল উপজেলার একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের দরবেশের কান্দা হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।

শনিবার রাত ১টায় মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ভাড়া বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে মনোহরদী থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের সেবিকা আয়েশা আক্তার হ্যাপিকে আটক করেছে পুলিশ।

ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, নেত্রকোনার বাসিন্দা তোফাজ্জল হোসেন নরসিংদীর মনোহরদীর দরবেশের কান্দা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। পরে তিনি প্রাইভেট শিক্ষকতা শুরু করেন।

ওসি বলেন, স্থানীয় হাসপাতালের সেবিকা আয়েশা আক্তার হ্যাপির স্বামীর মৃত্যুর পর তার ১০ বছরের ছেলেকে কোরআন শিক্ষা দিচ্ছিলেন তোফাজ্জল। ওই সময় তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে হ্যাপির ঘনিষ্ঠতা ও পরে তাদের বিয়ে হয়। পরে তারা ছেলেসহ মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন।

স্ত্রী আয়েশা আক্তারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শৌচাগারে ঢোকার পর দীর্ঘ সময় পরও বের হচ্ছিলেন না তোফাজ্জল হোসেন। পরে তিনি শৌচাগারের দরজা ধাক্কা দিয়ে খুলে স্বামী তোফাজ্জল হোসেনকে গলাকাটা অবস্থায় ছটফট করতে দেখেন। ওসি বলেন, এ সময় তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে ঘটনাস্থলেই তোফাজ্জলের মরদেহ দেখতে পান। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার ও স্ত্রী আয়েশাকে আটক করে।

ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধা ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামে রাস্তার পাশ থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের (৩৫) মস্তকবিহীন লাশ উদ্বার করা হয়েছে।

রোববার সকাল ১০টার সময় ভাঙ্গা থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে  থানায় নিয়ে যায়। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

ছবি; ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) গাজী রবিউল ইসলাম বলেন, সকালে স্থানীয়রা দেওড়া গ্রামের রাস্তার পাশে একটি লাশ দেখে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ওই যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, রাতের কোনো এক সময় খুনিরা তাকে হত্যার পর মাথা অন্যত্র নিয়ে দেহটি এখানে ফেলে গেছে বলে মনে হচ্ছে। লাশ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে তিনি জানান।

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সিরাজগঞ্জ সদরে হুড়াসাগর নদী থেকে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

সদর থানার এসআই রেজাউল করিম বলেন, রোববার দুপুরে দুখিয়াবাড়ি হুড়াসাগর নদীতে একটি লাশ ভেসে উঠলে নদীর দুই পাড়ে শত শত মানুষ লাশটি দেখতে ভিড় জমায়। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ তা উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

তিনি জানান, নিহতের আনুমানিক বয়স ৪০ বছর। এ ঘটনায় থানায় ইউডি মামলা হয়েছে।

সাভার প্রতিনিধি জানান, ঢাকার সাভারের নামাগেন্ডায় একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে নিখোঁজ এক রিকসা চালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রোববার দুপুরে নামাগেন্ডা তারা মসজিদ সংলগ্ন পরিত্যক্ত ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

ছবি: সাভার প্রতিনিধি

নিহত তৌহিদুল ইসলাম ওরফে খাজা (৪৩) দিনাজপুরের বাসিন্দা। তিনি সাভারের গেন্ডা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের বাড়িতে ভাড়া থেকে রিকশা চালাতেন।

সাভার মডেল থানার এসআই অপূর্ব দত্ত বলেন, দুপুরে নামাগেন্ডা এলাকায় ডোবায় কচুরিপানার নিচে এক ব্যক্তির মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, লাশের গলায় গামছা প্যাঁচানো ছিল। এতে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ রাতের আঁধারে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে দূবৃত্তরা। তবে লাশটি ২/৩ দিন আগের হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, তৌহিদুল ইসলাম ওরফে খাজা শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিল। লাশের চেহারা বিকৃত হওয়ায় ঠিকমতো চেনা যাচ্ছে না, তবে শরীরের পোশাক দেখে পরিবারের লোকজন ধারণা করছে লাশটি তৌহিদুলের।

এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।