বুধবার ত্রিপুরার আগরতলা থেকে সীমান্তের শূন্য রেখা পেরিয়ে দেশে ফিরে মা সাফিয়া বেগমকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই তরুণী।
বীথি আক্তার (২৮) নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পাচুয়া গ্রামের হিমায়েত খন্দকারের মেয়ে।
নড়াইলের সমাজকর্মী সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন উদ্যোগ নিয়ে তাকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।
খায়রুল আলম বলেন, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বীথি ২০১০ সালে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পায়নি পরিবারের লোকজন।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের বরাত দিয়ে খায়রুল বলেন, পরে ২০১২ সালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার সালেমা থানা পুলিশ তার সন্ধান পায় এবং তাকে আদালতে হাজির করে।
“ওই সময় মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তিনি কীভাবে ত্রিপুরায় গিয়েছেন সেই তথ্য কেউ জানাতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়। বীথি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওই বছরের ১৭ মার্চ আদালতের নির্দেশে তাকে ধলাই জেলার মডার্ন মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তিনি এতদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।”
চিকিৎসা শেষে সুস্থ হওয়ায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহায়তায় বীথি নিজ দেশে ফিরেছেন বলে জানান খায়রুল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় এক দশক পর মেয়েকে পেয়ে মা সাফিয়া বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন দৃশ্যের অবতরাণা হয়। মা-মেয়ের এই দৃশ্য দেখে সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
মেয়েকে ফিরে পেয়ে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সাফিয়া বেগম।
ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনার কিরিটি চাকমা সাংবাদিকদের বলেন, “ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও পুলিশকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা এই উদ্যোগ না নিলে বীথির কী হতো সেটি আমরা জানি না।”
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মডার্ন মানসিক হাসপাতালে আরও কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক চিকিৎসাধীন আছেন। তাদেরকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বীথিকে চেকপোস্টে ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব মো. জাকির হোসেন ভূইয়া, দ্বিতীয় সচিব এস এম আসাদুজ্জামান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৫ ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ গোলাম কবির, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার রেইনা ও আখাউড়া থানার ওসি রসুল আহমদ নিজামী উপস্থিত ছিলেন।