আবার একই কলেজের আরেকটি শাখায় এমপিওভুক্তির সব শর্ত পূরণ করলেও বাদ পড়েছে সেটা।
সম্প্রতি এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে জামালপুর সদর উপজেলার ‘দিপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজে’ এ ঘটনা ঘটে।
কলেজটির কৃষি ডিপ্লোমা শাখার কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারী নাই, এমনকি একাডেমিক স্বীকৃতিও নেই। অথচ কলেজটির নাম এমপিও তালিকায় উঠেছে।
অন্যদিকে, একই কলেজের এইচএইসসি (বিএম) শাখায় এমপিওভুক্তির সব শর্তই বিদ্যমান; কিন্তু সেটির এমপিও হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে ওই দিপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ সংশ্লিষ্টরাই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মহির উদ্দিন তালুকদার বলেন, “এ কলেজের কৃষি ডিপ্লোমা শাখায় শিক্ষক, কর্মচারী ও একাডেমিক স্বীকৃতি নেই। কীভাবে এই শাখা এমপিওভুক্ত হলো সেটা আমার জানা নেই।”
এদিকে, এমপিওভূক্তির ক্ষেত্রে ভুল তথ্য বা অসত্য হলে তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি।
গত রোববার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “যেসব তথ্যাদির ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে, সেসব তথ্য ভুল বা অসত্য প্রমাণ হলে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
“প্রদানকৃত তথ্যের সঠিকতা যাচাই সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে এমপিওভুক্তির আদেশ কার্যকর হবে।”
জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজে সংযুক্ত দুটি শাখার একটি এইচএইসসি (বিএম) শাখা, আরেকটি কৃষি ডিপ্লোমা শাখা।
চলতি বছরের ২৭ মে এইচএসসি (বিএম) শাখা এমপিওভুক্ত করার জন্য সদর আসনের সংসদ সদস্য কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) প্রদান করেন বলে জানান এ কলেজের অধ্যক্ষ মো. মহির উদ্দিন তালুকদার।
এই শাখার ‘একাডেমিক স্বীকৃতি আছে এবং ফলাফল সন্তোষজনক’ বলে চাহিদাপত্রে উল্লেখ করেছেন মোজাফ্ফর।
অধ্যক্ষ মহির উদ্দিন বলেন, কিন্তু এই শাখা বাদ পড়লেও এমপিও তালিকায় এসেছে তার কলেজের কৃষি ডিপ্লোমা শাখার নাম, যেটিকে এমপিওভুক্ত করার জন্য ‘সংসদ সদস্য কোনো ডিও লেটারও দেননি।’
“কৃষি ডিপ্লোমা শাখার শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র চার; সেখানে কোনো শিক্ষক-কর্মচারী নাই। এমনকি একাডেমিক স্বীকৃতিও নেই।”
জামালপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য এবং দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, বিএম শাখা এমপিওভুক্ত করার জন্য গত ২৪ অক্টোবর পুনরায় চাহিদাপত্র দিয়েছেন।
১৯৮৫ সালে জামালপুর-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কের পাশে ৬ দশমিক ১৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজ।
কলেজের এইচএসসি শাখার কম্পিউটার অপারেশন, হিসাবরক্ষণ ও সেক্রেটারিয়াল সায়েন্স তিনটি ট্রেডে শতভাগ যোগ্যতা থাকার পরও এমপিও না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বললেন সংশ্লিষ্টরা।
এইচএসসির ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শাখায় মোহাম্মদ মকবুল হোসেন, মোহাম্মদ তাজুল ইসাম ও একেএম হুমায়ুন শরীফ প্রভাষক হিসেবে কাজ করছেন।
২০০৫ সালের ১২ জানুয়ারি তারা তিনজনসহ সাতজন শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন বলে জানান তারা।
মোহাম্মদ মকবুল হোসেন বলেন, “যোগদানের পর শিক্ষক কর্মচারীদের দিনরাত পরিশ্রমে এই শাখার ফলাফল সন্তোষজনক হয়েছে। এমপিও না হওয়ায় বর্তমানে শিক্ষক কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।”