দিনাজপুরের সেই মুক্তিযোদ্ধার ছেলের চাকরি এবার হাসপাতালে

দিনাজপুরে গার্ড অব অনার প্রত্যাখ্যান করে চিঠি লেখা সেই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে জেলা প্রশাসকের দেওয়া চাকরিতে যোগ না দিলেও এবার তাকে একটি সরকারি হাসপাতালে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা এসেছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2019, 12:41 PM
Updated : 28 Oct 2019, 01:35 PM

মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের কবর জিয়ারত ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর দিনাজপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘোষণা দেন।

এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের খোঁজখবর নেন।

সংসদ সদস্য বলেন, “মুক্তিযোদ্ধার চাকরিচ্যুত সন্তানকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের গাড়িচালক পদে চাকরি দেওয়া হবে।

“এছাড়া রাষ্ট্রীয় মার্যাদায় মুক্তিযোদ্ধার দাফন না হওয়ার ঘটনা তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুক্তিযোদ্ধার সম্মান ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ বরদাশত করবে না সরকার।”

এদিকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নূর ইসলাম বিজিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি জেলা প্রশাসকের দেওয়া চাকরিতে যোগ না দিলেও হাসপাতালের চাকরিতে যোগ দেবেন।

এর আগে জেলা প্রশাসক তাকে চাকরিতে যোগ দিতে বললেও তার পরিবার প্রত্যাখ্যান করে। তখন নূর ইসলাম বলেছিলেন, “এত ঘটনার পর আমার পক্ষে আর চাকরি করা সম্ভব নয়।”

নূর ইসলাম ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িচালক পদে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তিতে চাকরি করছিলেন। সেই সুবাদে তিনি একটি সরকারি পরিত্যক্ত বাড়িতে বসবাসের সুযোগ পান।

নূর ইসলাম বলেন, গত সেপ্টেম্বরে সহকারী কমিশনার তার বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে অসন্তুষ্ট হন। এরপর তার চাকরি চলে যায় এবং বসবাসের বাড়ি থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়।

“বিষয়টি নিয়ে আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন চাকরি ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে বারবার অনুরোধ করেও সাড়া পাননি।”

পরে সংসদ সদস্য হুইপ ইকবালুর রহিম বরাবর বিষয়টি উল্লেখ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ আক্টোবর চিঠি লেখেন মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল। এর পরদিনই তার মৃত্যু হয়।

ওই চিঠিতে তিনি প্রশাসনের গার্ড অব অনার প্রত্যাখ্যান করেন। এ কারণে তার পরিবারের আপত্তির মুখে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই তার দাফন হয়।

এদিকে এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানরা সোমবার বেলা ১২টায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন।