উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১২ সালে জয়পাড়া মৌজার আরএস ৮৯১ খতিয়ানের ২২০৯ দাগে ১১ শতাংশ জমি এক বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়।
দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান খোকন শিকদারের নামে সাত শতাংশ আর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতালেব খানের নামে চার শতাংশ লিজ দেওয়া হয়েছে।
ভূমি কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ বলেন, “লিজের সম্পত্তিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে তারা লিজের শর্ত ভঙ্গ করেছেন।”
উপজেলা আওয়ামী লীগের ‘অস্থায়ী কার্যালয় ও শহীদ মিনার’ বানানোর জন্য এই জমি তাদের লিজ দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি জানান।
কিন্তু পরে ওই জমিতে চারতলা ভবন বানিয়ে ভাড়া দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে মুক্তি ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে।
দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই ভবনের জমির পেছনের অংশের সাত শতাংশ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের জন্য আমার ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান খোকন শিকদারের নামে লিজ নেওয়া হয়। আর সামনের অংশের চার শতাংশ লিজ নিয়েছিলেন মোতালেব খান।
মোতালেব খান লিজ নেওয়া জমিতে ভবন নির্মাণের কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অনুমোদন নিয়ে আমি ব্যক্তিগত অর্থায়নে ভবনটি নির্মাণ করেছি।”
কোন ইউএনও তাকে অনুমতি দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি তার নাম বলতে পারেননি। এ বিষয়ে তিনি কোনো প্রমাণও দেখাতে পারেননি।
দোহার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মশিউর রহমান বলেন, “পৌরসভা থেকে ওই ভবন নির্মাণের কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি।”
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
“পরে তারা নোটিশের জবাব দিয়েছেন। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের আরেকটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।”
ইউএনও আফরোজা আক্তারও দুই দফা নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বর্তমানে ওই ভবনের ওপরের তালা ফাঁকা থাকলেও তার নিচের তিনটি তালায় রয়েছে মুক্তি ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এর একজন মালিক আব্দুস সালাম।
আব্দুস সালাম বলেন, “এই ক্লিনিকের মালিক আমরা একত্রিশ জন। তাদের মধ্যে ভবন মালিক মোতালেব খানও রয়েছেন। তার কাছ থেকে ২০১৫ সালে আমরা চারতলা ওই ভবনটি ভাড়া নিয়ে নিজেদের খরচে ডেকোরেশন করে মুক্তি ক্লিনিক নামে এই প্রাইভেট ক্লিনিক করি। প্রতি মাসের ভাড়ার ৪০ হাজার টাকা আমরা তাকেই পরিশোধ করি।”