রিনা আক্তার নামের ওই শিক্ষার্থী হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে এবার বিজ্ঞান শাখায় এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় অংশ নিতে সিলেটের পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পৌঁছতে দুই মিনিট দেরি হয়েছিল তার।
রিনা আক্তারের বড় ভাই আখতার হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা সকালে নবীগঞ্জের বাড়ি থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন। প্রবল বৃষ্টি ও যানজটের কারণে কেন্দ্রে পৌঁছতে ৯টা ৩২ মিনিট বেজেছিল। তখন পরীক্ষার হলে ঢুকতে তার বোনকে বাধা দেন গার্ড।
“বাধা পেলে আমরা দায়িত্বরত ইনচার্জ শিক্ষকদের অনুরোধ করি। তারা আসতে আসতে তখন বাজে ৯টা ৩৫ মিনিট। কিন্তু তারাও আমাদের অনুরোধে কর্ণপাত করেননি।”
আখতার বলেন, “আমার বোনটি কান্নাকাটি করছিল। উপস্থিত অন্যান্য অভিভাবকরা ও ইনচার্জদের অনুরোধ করলেও তারা তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেননি, একটুও তাদের মন গলেনি।”
তিনি বলেন, এক পর্যায়ে ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক বেলাল হোসেনকে ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি পরীক্ষা নিতে ইনচার্জদের অনুরোধ করেন। কিন্তু তারপরও ইনচার্জরা পরীক্ষা নেননি।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, “মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে পরীক্ষা দিতে দেওয়া উচিত ছিল। আমি ঘটনাটি তাৎক্ষণিকভাবে জানলে আমলে নিতাম।”
টানা বৃষ্টি আর যানজটের মধ্যেই এবারের পরীক্ষা ক্যাম্পাসসহ নগরীর মোট ৪৩টি কেন্দ্রে (‘এ’ ‘বি’ও ‘বি-১) মোট তিন ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সকাল-বিকাল অনুষ্ঠিত হয়।
গত বছর যানজটের কারণে পরীক্ষা কেন্দ্রে সময়মতো পৌঁছতে না পারা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন ভর্তি কমিটির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও প্রক্টর জহীর উদ্দিন আহমেদ।
তিনি ওই সময় বলেছিলেন, “যানজটের কারণে নিজ পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে না পারলে পার্শ্ববর্তী যেকোনো কেন্দ্রে গিয়েও শিক্ষার্থীরা এডমিট কার্ড দেখিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে পারবে।”
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল হাদি বলেন, “গতবছর শিক্ষার্থীদের মানবিক দিক বিবেচনা করা হলেও এ বছর পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে দুই মিনিট দেরি হওয়ায় পরীক্ষা নেওয়া হল না। তীব্র যানজট আর বৃষ্টির মধ্যে মধ্যে ২ মিনিট দেরি হওয়া তো স্বাভাবিক ঘটনা।”
এ বিষয়ে জানার জন্য ওই কেন্দ্রের ইনচার্জ অধ্যাপক হোসেন আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
ভর্তি কমিটির সভাপতি আধ্যাপক বেলাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরীক্ষার কেন্দ্রে তার সাড়ে ৯টায় প্রবেশের কথা ছিল। সে দেরি করবে কেন? এটা কোনো অভিযোগই হতে পারে না। পরীক্ষা শুরুর পর কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয় না, যানজট হোক আর যাই হোক।”
তবে তিনি নিজে অনরোধ করেছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি তখন অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তার টাইমে তো প্রবেশ করা উচিত ছিল।”