চাকরি ফেরত পাচ্ছেন দিনাজপুরের সেই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে

দিনাজপুরে মৃত্যুর আগে প্রশাসনের গার্ড অব অনার প্রত্যাখ্যান করে চিঠি লেখা সেই মুক্তিযোদ্ধার ছেলের চাকরি ফিরিয়ে দিচ্ছে প্রশাসন।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2019, 06:04 PM
Updated : 25 Oct 2019, 06:09 PM

সদর উপজেলার যোগিবাড়ী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন তার গাড়িচালক ছেলেকে চাকরি ও বাস্তুচ্যুত করাসহ মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে এই চিঠি লেখেন। তারপর বুধবার রাতে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান। পরিবারের আপত্তির কারণে বৃহস্পতিবার তাকে গার্ড অব অনার ছাড়াই দাফন করা হয়।

জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, তিনি ইসমাইল হোসেনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন।

“চিঠির বিষয়টি আমাকে আগেই জানালে আমি তাৎক্ষণিক এর সমাধান দিতাম। এখন তো আর রাষ্ট্রীয় সম্মানটা দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তার ছেলে চাকরি করবেন।”

এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের পরিবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখান করার ঘটনা তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাকে রোববার প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

ইসমাইল হোসেনের ছেলে নূর ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জেলা প্রশাসক আমাকে তার কার্যালয়ে রোববার যোগদানের কথা বলেছেন।

“আমরা চাইলে আমাদের একটি ঋণ পরিশোধের দায়িত্বও নেবেন তিনি। এছাড়া যেকোনো সমস্যায় আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।”

নূর ইসলাম বলেন, তিনি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) গাড়িচালক পদে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তিতে চাকরি করছিলেন। সেই সুবাদে তিনি একটি সরকারি পরিত্যক্ত বাড়িতে বসবাসের সুযোগ পান।

“গত সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার তার বাড়িতে একটি ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে অসন্তুষ্ট হন। এরপর আমার চাকরি চলে যায় এবং বসবাসের বাড়ি থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়।”

বিষয়টি নিয়ে তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন ছেলের চাকরি ফিরিয়ে দিতে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে বার বার অনুরোধ করেও সাড়া পাননি বলে নূর জানান।

তিনি বলেন, পরে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বরাবর বিষয়টি উল্লেখ করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ আক্টোবর একটি চিঠি লেখেন এবং পরদিনই তার মৃত্যু হয়। চিঠির শেষ অংশে তিনি লেখেন, মৃত্যুর পর তাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা না হয়।

ইকবালুর রহিমের সুপারিশে নূর ইসলামের ওই চাকরিটি হয়েছিল বলে জানান নূর ইসলাম।