স্থানীয় পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তা ‘লোকবল কম’ জানিয়ে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, “এত বড় বিশাল জলপদ যৎসামান্য লোকবল দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব। প্রশাসনের লোকজন একদিকে গেলে জেলেরা অন্যদিকে যায়। মৌমাছির মত ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে পড়ে জেলেরা।
“ইতোমধ্যেই প্রায় এক হাজার ৩০০ জনকে নিষেধাজ্ঞাকালে মাছ ধরার অপরাধে আটক করেছি। বিভিন্ন মেয়াদে জেল-জরিমানা করা হয়েছে এক হাজার পাঁচজনকে। ২৫টি সি-বোট ১০০ নৌকা, ৫৬ লাখ মিটার কারেন্ট জালসহ প্রায় ১০ মেট্রিটন মা ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। তবু জেলেদের থামানো যাচ্ছে না।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা নওপাড়া, সুরেশ্বর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার গৌরাঙ্গ বাজার, স্টেশন বাজার, কাচিকাটা, দুলারচর, আলুর বাজার, গোসাইরহাট উপজেলার সাতপাড়, চরজালালপুর কোদালপুর এলাকায় পদ্মায় প্রতিদিন হাজার হাজার জেলে ডিঙ্গিনৌকা, ইঞ্জিন চালিত নৌকা, সি-বোট নিয়ে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরছেন জেলেরা।
এলাকাবাসী জানান, জেলেরা মাছ ধরে নদীর পাড়ে এনে চোরা কারবাড়িদের কাছে অল্প দামে বিক্রি করেন। চোরা কারবারিরা মোটরসাইকেলে করে, অটোরিকশায়, স্কুল ব্যাগে, বস্তাবন্দি করে মাছ গ্রাম অঞ্চলে নিয়ে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করছেন।
জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, “বিলাসপুর,পালের চর ও কুণ্ডের চর এলাকায় পদ্মায় জেলেরা দিনরাত অবাধে মাছ শিকার করছে।”
অনেকে অভিযোগ করেছেন, জাল-নৌকার মালিকরা পুলিশকে ‘মাছ দিয়ে ম্যানেজ’ করে জেলেদের মাছ ধরতে পাঠান।
তবে পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জাজিরা থানার ওসি মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, “পুলিশ কোনো মাছ নেয়নি। যদি কেউ বলে থাকে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা সম্মিলিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করছি। তার পরও বিশাল বড় নদীর এক দিকে অভিযান চালালে জেলেরা অন্যদিকে নেমে পড়ে।”
ইলিশের প্রজনন মৌসুম হিসেবে বিভিন্ন নদ-নদীতে ২২ দিনের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলছে। আগামী ৩০ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।