পাবনার সেই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপর হামলার পর সমালোচনার মধ্যে থাকা পাবনার এক ছাত্রলীগ নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

পাবনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2019, 03:26 PM
Updated : 23 Oct 2019, 03:48 PM

মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয় বলে জেলা নেতারা নিশ্চিত করেছেন।

 
বহিষ্কৃত এই নেতা জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির সোহেল মিলন। তিনি সদর উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মুন্সির ছেলে।

মিলনকে বহিষ্কারের পর এলাকাবাসী উল্লাস করেছে, মিষ্টি খেয়েছে।

সম্প্রতি মিলনের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে পাবনা জেলা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নজরে আসে। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম কমিটি করার সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর ‘হামলা চালায় মিলনসহ তার বাহিনী’।

তাজুল বলেন, এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আসাদুল্লাহ সুইটসহ অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে জেলা ছাত্রলীগের কাছে কেন্দ্র থেকে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়।

“পরে তদন্ত সাপেক্ষে আামির সোহেল মিলন ও তার বাহিনীর সকল অপকর্মের সত্যতা মিললে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।”

সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রিন্টু বলেন, এই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তার বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মুন্সি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে তাদের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে গেছে এলাকার মানুষ।

“চেয়ারম্যান ও তার ছেলে মিলন মিলে এলাকায় সুদের কারবার, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, সালিশী বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন।”

রেজাউল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে গেলেই তাদের ধরে নিয়ে মিলন বাহিনীর নিজস্ব টর্চার সেলে নিয়ে ব্যাপক মারপিট করার অভিযোগও রয়েছে।

মিলনের বহিষ্কারের খবরে মিষ্টি খেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন এলাকার লোকজন

“এই বাহিনীর অত্যাচারে ইতিমধ্যেই সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন থেকে অন্তত দেড়শত পরিবার ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছন। বিষয়টি নিয়ে দলের উপজেলা ও জেলা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করার পরও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।”

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রইচ উদ্দিন খান বলেন, “গত রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি গ্রাম কমিটি করার সময় সবার প্রত্যক্ষ সমর্থনে মিলন ও তার বাবার অনুগত লোক সভাপতি সম্পাদক পদে হেরে গেলেই আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

“বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ মঙ্গলবার রাতে একটি তদন্ত করে। তদন্ত শেষে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়।”

শুধুমাত্র মিলন ওতার পরিবারের অপকর্মের জন্যেই উপজেলা আওয়ামী লীগ এই সিদ্ধান্ত নেয় বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক টিপু বলেন, “আমরা ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করে মিলন ও তার বাবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত করেছি।”