সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. শাকিল হামজাকে মারপিট করে দেড়ঘণ্টা শৌচাগারে আটক রাখার অভিযোগ ওঠে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ আলী সেখের বিরুদ্ধে।
তবে ইউসুফ আলী সেখ ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথাকাটাকাটির বিষয় স্বীকার করলেও মারপিটের কথা অস্বীকার করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বেলকুচি থানায় গেলেও ওসি মামলা নেননি বলে অভিযোগ ডা. শাকিলের।
ডা. শাকিল হামজার অভিযোগ, সোমবার হাসপাতালে রোগী দেখার সময় দুপুর পৌনে ১২টার দিকে একজন মহিলা (পুরাতন রোগী) এক যুবককে নিয়ে টিকিট ছাড়া তার কক্ষে প্রবেশ করেন।
নতুন রোগীর চাপ থাকায় তাকে পরদিন আসার জন্য পরামর্শ দেন বলে জানান শাকিল।
“তারা চলে যাওয়ার ৫/৭ মিনিট পর ইউসুফ শেখ কক্ষে প্রবেশ করেই আমাকে মারপিট শুরু করেন। আমাকে গলা চেপে ধরে লাথি মারতে মারতে টেনে হিঁচড়ে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।”
শাকিল বলেন, “বিকালে ঘটনার বিষয়ে মামলা করতে থানায় গেলে ওসি সাহেব (বেলকুচি থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম) বলেন আপনার সম্পর্কে অনেক নেগেটিভ কথা শুনেছি। অভিযোগ নেওয়ার কথা বললেও নানা টালবাহানায় তিনি অভিযোগ নেননি। বিষয়টি আমি সার্কেল এএসপি ও ঊর্ধ্বতন চিকিৎসক কর্মকর্তাদের অবগত করেছি।”
এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ওসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসক থানায় এসে ঘটনার কথা জানিয়েছেন। অভিযোগ নিয়ে পরে আসবেন জানালেও আর আসেননি।
“চিকিৎসক কোনো অভিযোগ না দিলেও একজন মহিলা তার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেছেন।”
বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসলিমা জান্নাত বলেন, “শাকিলের সঙ্গে একজন মহিলা রোগীর কথাকাটাকাটির কারণে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তার লোকজন নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারপিট ও ওয়াশরুমে আটকে রেখেছিল।”
কোনো জনপ্রতিনিধি একজন সরকারি চিকিৎসকের গায়ে কোনোভাবেই হাত তুলতে পারে না; এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, বলেন ডা. তাসলিমা।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মন্ডলকে অবগত করা হয়েছে। তিনি বৃহস্পতিবার এলাকায় এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ আলী শেখ বলেন, “চিকিৎসক শাকিল হামজা একজন মহিলা রোগীর সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি জানার পর আমি চিকিৎসকের রুমে গিয়ে দুর্ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তার সাথে আমার তর্কাতর্কি হয়েছে। মারপিটের কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। ওই চিকিৎসক আমাকে ঘটনার বিষয়ে অবগত করেননি।”
প্রকৃত তথ্য জেনে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পরামর্শ দেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিনিধিকে।