ভোলায় সংঘর্ষে নিহতদের দাফন সম্পন্ন

ফেইসবুক হ্যাক হওয়ার পর মেসেঞ্জারে নবীকে নিয়ে কথিত কটূক্তির স্ক্রিনশট ছড়িয়ে ভোলার বোরহানউদ্দিনে সৃষ্ট সহিংসতায় নিহত চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

ভোলা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 05:23 PM
Updated : 21 Oct 2019, 05:24 PM

সোমবার নিজ নিজ এলাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের দাফন করা হয় বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

নিহতরা হলেন বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর ছেলে মাদ্রাসাছাত্র মাহবুব (১৪), কাচিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দেলওয়ার হোসেনের ছেলে কলেজছাত্র মো. শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫), মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান।

বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভ নামের  এক যুবকের ফেইসবুক আইডি থেকে ‘অবমাননাকর’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে ‘মুসলিম তাওহীদি জনতা’র ব্যানারে রোববার সমাবেশের পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় কয়েশ মানুষ।

প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষে চারজন নিহত হন, তাদের মধ্যে দুজনের মাথা ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে থেঁতলানো ছিল বলে চিকিৎসকের বরাতে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। হামলা-সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়, তাতে এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। 

এ ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানায় ‍উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রোববার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়ের করেন, যেখানে আসামি হলেন বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য শুভ, বোরহানউদ্দিনের কাচিয়া ইউনিয়নের মো. ইমন ও রাফসান ইসলাম শরীফ ওরফে শাকিল।

সংঘর্ষের ওই ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানায় আলাদা একটি মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও হত্যার অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে সেখানে।

সোমবার দুপুরে নিহতদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক জানিয়েছেন।

এদিকে, নিহতদের পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন ভোলা-২ (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল।

আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান আলী আজম মুকুল। 

ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, “সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ কোনো দাবি নিয়ে আমাদের কাছে আসেনি, আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে রোববারের তাদের তিনটি দাবি আমরা মেনে নিয়েছি।”

তবে ‘সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ’র যুগ্ম সদস্য সচিব মিজানুর রহমান বলেন, “প্রশাসন এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো দাবি মেনে নেয়নি। তাই আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দাবি মানা না হলে চলমান আন্দোলসহ হরতাল-অবরোধের মত বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে।”

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে, কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর আমরা পাইনি। তবে আমরা নিহতদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করেছি, এছাড়াও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”