জেলা অবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে এ জেলায় শীতের আগমন ঘটলেও এবার আশ্বিন মাসের শেষ ভাগেই হালকা শীত অনুভূত হতে শুরু করেছে।
তবে আবহাওয়া গত বছরের চেয়ে এবার স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছেন রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়া বিদ মোস্তাফিজার রহমান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, হিমালয় কাছে হওয়ার এ অঞ্চলের আগাম শীত শুরু হয়। এখন দিনে তাপের শোষণ হয়, সে কারণে দিনে বেশি গরম অনুভূত হয়। আর সন্ধ্যার পর থেকে তাপের বিকরণ হওয়ার সাথে শীত পড়া শুরু করে, এ কারণে রাতে ঠাণ্ডা অনুভব হয়।
তবে ডিসেম্বর থেকে ঠাণ্ডা বাড়তে পারে বলে জানান মোস্তাফিজার।
তারা জানান, এখন ভোরে দিকে হালকা কুয়াশা থাকে; ফলে মহাসড়কে বাস ও ট্রাকগুলোকে হেডলাইট চালিয়ে চলাচল করতে হয়। শীত শীত অনুভূত হওয়ায় অনেকেই গরম কাপড় পড়ে কাজে বের হচ্ছেন।
এরপর বেলা গড়ালে তাপমাত্রা বাড়লেও বেশি থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকেই কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাতভর হালকা বৃষ্টির মত টুপটুপ করে কুয়াশা ঝরতে থাকে। বিশেষ করে ধানের শীষে কুয়াশা বিন্দু বিন্দু জমতে দেখা যায়।
চা দোকানি জাহাঙ্গীর বলেন, দুই দিন থেকে মোটর সাইকেলে ভোরবেলা দোকানে আসার সময় শীত শীত লাগছে। এর ফলে হালকা গরম কাপড় গায়ে দিয়ে দোকানে আসতে হয়।
সদর উপজেলার বাস চালক মকবুল হোসেন বলেন, “গত বছর এমন সময়ে কোনো কুয়াশা দেখিনি। এ বছর দুদিন ধরে সকালে বাস নিয়ে বের হওয়ার সময় হেডলাইড জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।”
শীত আসছে জানান দিলেও লেপ তোষাকের দোকানে এখনও ক্রেতাদের ভিড় জমেনি। কয়েকজন গরম কাপড় বিক্রেতা জানালেন, শীতের লেপ-তোষক বানানোর কাগজ শুরু হতে আরও ২০-২৫ দিন লাগবে।
স্থানীয় সবজি চাষি বাদশা মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হালকা শীতের কারণে ফসলে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস আক্রমণ শুরু করে। এতে ফসলে কীটনাশক প্রয়োগ করতে। উৎপাদন খরচও বেড়ে যায়।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সরওয়ারুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, অসময়ে হালকা শীতের কারণে বিভিন্ন ফসলে রোগ-বালাই দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
“মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আমরাও ফসলের সুরক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছি।”
তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফসলের রোগ-বালাই কাটিয়ে বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা এই কৃষি কর্মকর্তার।