রাবি শিক্ষার্থীকে হুমকির অভিযোগ, থানায় জিডি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীকে প্রশাসন ও ছাত্রলীগ নেতার হুমকির অভিযোগ উঠেছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিশফিকুল ইসলাম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2019, 04:01 PM
Updated : 13 Oct 2019, 04:01 PM

এই অভিযোগে রোববার সন্ধ্যায় নগরীর মতিহার থানায় ওই শিক্ষার্থী সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

অভিযোগকারী শিক্ষার্থী আব্দুল মজিদ অন্তর চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগে এমফিল-এ পড়াশুনা করছেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন।

জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, রাবিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। এরপর আবরার হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় এক ছাত্রলীগ নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে তাকে হুমকি দেন। এছাড়া গত ৬ অক্টোবর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করার আগে সেদিন দুপুরে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন লোক তাকে তুলে নিয়ে যায় এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত আটকে রাখে। সেখানে তাকে প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থী ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে বসে চা খেলেও প্রক্টর তাদের হুমকি দিচ্ছে।

এ অবস্থায় তিনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বলে জিডিতে উল্লেখ করেন।

আব্দুল মজিদ অন্তর সাংবাদিকদের বলেন, “কয়েকদিন আগে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান মিশু ফেইসবুকে আমাকে হুমকি দিয়েছেন।”

এ ব্যাপারে মেহেদী হাসান মিশু বলেন, “আন্দোলন চলাকালে আব্দুল মজিদ অন্তর ও সাকী ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা উচিত বলেছিল। সেটা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? আমার ফেইসবুক স্ট্যাটাসে ‘দুই কুলাঙ্গার তোদের সাথে দেখা হবে রাজপথে আসিস’ এটা বলেছি। এটা আমি সাংগঠনিকভাবে লিখেছি, রাজপথে আসিস দেখা হবে। কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়নি।”

হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, “আমি কাউকে হুমকি দেইনি। আমি কেন হুমকি দিতে যাব? ওসব অভিযোগ মিথ্যা।”

নগরীর মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, সন্ধ্যায় ওই শিক্ষার্থী জিডি করেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়ার সঙ্গে আইন বিভাগের এক চাকরি প্রত্যাশীর স্ত্রীর দর কষাকষির ফোনালাপ ফাঁস হয়। এতে উপ-উপাচার্যের জামাতা ও এক আওয়ামী লীগ নেতার মেয়ে নিয়োগ পেলেও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাওয়া নুরুল হুদা নামের ওই চাকরি প্রত্যাশীর নিয়োগ হয়নি। এর আগে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান নিয়েও সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ অক্টোবর থেকে নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত এবং প্রশাসনের পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে আসছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ওই আন্দোলনে আব্দুল মজিদ অন্তর সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আসছেন।