বগুড়ায় শ্রমিক লীগের ভোজের আয়োজনে রাস্তা বন্ধ

জাতীয় শ্রমিক লীগের ভোজ ও অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য বগুড়া শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দুদিন ধরে বন্ধ করে দিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2019, 04:45 PM
Updated : 12 Oct 2019, 04:59 PM

শহরের তিনমাথা থেকে জিরো পয়েন্ট সাতমাথা পর্যন্ত দুই লেনের সড়কের একটি লেন শুক্রবার রাত থেকে শনিবারও বন্ধ থাকে।

এ ব্যাপারে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও পৌরসভায় দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে বললেও অনুমতি পেয়েছে কিনা নিশ্চিত করা হয়নি।

তবে বগুড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ রাস্তা বন্ধ করে অনুষ্ঠান করার অনুমতি দেয়নি বলে দাবি করছে।

জাতীয় শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়ায় সংগঠনটির দুটি অংশ পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

জেলা সভাপতি আব্দুস সালামের অনুসারীরা শহরের কলোনি এলাকায় দোয়া ও আলোচনা সভা করেছে।

সাধারণ সম্পাদক শেখ শামসুদ্দি হেলালের পক্ষের নেতাকর্মীরা তিনমাথা এলাকায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার সকালে শহরের সাতমাথার আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে শোভাযাত্রা বের হলেও সেখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন না। বিকাল ৩টায় তিনমাথা এলাকায় সাধারণ সম্পাদক শেখ শামসুদ্দিন হেলালের পক্ষে জাতীয় শ্রমিক লীগ যুব কমিটির সভাপতি রাকিব উদ্দিন প্রাং সিজারের নেতৃত্বে একটি আলোচনা সভা, খাওয়াদাওয়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুপুরের রান্নাও করা হয় রাস্তায়।

দুপুরে রাস্তায় কয়েক হাজার মানুষের খাওয়াদাওয়া চলে। রাতে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

সড়ক বন্ধ করায় বিশ্ব রোডের কাছের ওই রাস্তাটিতে যানজটের কারণে দুর্ভোগে পড়েন লোকজন।

এ নিয়ে সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা চালকসহ অনান্য যানবাহন চালকরা পড়েন বিড়ম্বনায়। যাত্রীদের ক্ষোভ জানাতে দেখা গেছে।

নগোঁর সাপাহারের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সকালে শহরের একটি ক্লিনিক থেকে রোগী নিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার সময় রাস্তা বন্ধের কারণে যানজটে পড়েন তিনি।

সদরের জামাদার পুকুরের লুৎফর রহমান বলেন, “ভাই রাস্তা বন্ধ করে অনুষ্ঠান করার কারণে শহরে যাতায়াতের খুবই অসুবিধায় পড়েছিলাম। কে এ ধরনের অনুমতি দেয়। তারা কি জনগণের সমস্যা বোঝে না?”

অটোরিকশা চালক বাবু চারমাথা থেকে সাতমাথায় যাতায়াত করেন। তিনিসহ এই রুটে ভাড়ায় অটোরিকশা চালক অনেকেই জানান, রাস্তা বন্ধ করে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় শনিবার তাদের তেমন আয় হয়নি।

এ ব্যাপারে জেলা শ্রমিক লীগ সাধারণ সম্পাদক ছামছুদ্দিন শেখ হেলালের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

জেলা শ্রমিকলীগ-যুব কমিটির সভাপতি রাকিব উদ্দিন প্রাং সিজার বলেন, ভোর থেকে রান্না করা হচ্ছে। ৮৩টি চুলায় আট হাজার লোকের রান্না করা হয়েছে। ওই রাস্তায় খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

রাস্তার উপর আয়োজনের জন্য বগুড়া পৌরসভা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দরখাস্ত দেওয়া আছে বলে তিনি জানান। তবে অনুমতি পেয়েছেন কিনা তা তিনি বলেননি।

এ ব্যাপারে পৌর চেয়ারম্যানকে এ কে এম মাহবুবকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

পৌরসভার সচিব রেজাউল করিম বলেন, “রাস্তা বন্ধ করে এ ধরনের অনুষ্ঠানের জন্য অনুমোতি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।”

এ ব্যাপারে মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেন, “রাস্তা বন্ধ করে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টিকারী এমন অনুষ্ঠানের অনুমতি পুলিশ কখনও দিতে পারে না।”