মধুমতীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম

মধুমতীর ভাঙনে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় অনেক বাড়িঘর, স্কুল-রাস্তা, মসজিদ-মাদ্রাসা, ঈদগাহ, কবরস্থান নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

ফরিদপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2019, 09:08 AM
Updated : 12 Oct 2019, 09:08 AM

খোঁজ নিতে গেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কর্মকর্তারা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান ভাঙন পরিস্থিতি।

উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনাম হাসান শিপন বলেন, তার ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামে দুই কিলোমিটারজুড়ে নদীভাঙন শুরু হয়েছে। শিখাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দারুল সালাম দাখিল মাদ্রাসা, একটি মসজিদ ও বড় গোরস্তান নদীগর্ভে চলে গেছে।

“আমার ইউনিয়নের একটি গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৬৫টি ঘর নদীতে চলে গেছে। আংশিক ভাঙনের স্বীকার হয়েছে শিকারপুর সড়ক ও চরডাঙ্গা-চরআজমপুর সড়কটি।”

এছাড়া গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১১৮টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান এনাম হাসান।

পাঁচুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজানুর রহমার সরদার বলেন, দক্ষিণ পাঁচুড়িয়া পুরো গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। উত্তর চর-নারানদিয়া গ্রামের কয়েকশ বাড়িঘর, ফসলি জমি, বাঁশতলা বাজার থেকে বোয়ালমারি উপজেলায় যাতায়াতের পাকা সড়কের তিন কিলোমিটার নদীগর্ভে চলে গেছে। পশ্চিম চর-নারানদিয়া গ্রামের প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয় ও দক্ষিণ চর-নারানদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

পঞ্চিম চর-নারানদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাব খাতুন জানান, তাদের বিদ্যালয়টি ভাঙনের ৩০ ফুটের মধ্যে রয়েছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ঠিকমত স্কুলে পাঠাচ্ছে না।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহিদ হাসান ভাঙনকবলিত ২০ গ্রামে মানুষের অসহায়াত্বের কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফায় মধুমতীর পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনকবলিত মানুষগুলো অসহায়ের মত তাদের বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। পাঁচুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশতলা সড়কের অধিকাংশ এবং টগরবন্দ এলাকার দুটি পাকা সড়কের অংশিক নদীরগর্ভে চলে গেছে।

তিনি এই ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষে দৃষ্টি কামনা করেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ভাঙন রোধে পাউবোর মাধ্যমে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এরই মধ্যে ২২৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।”

এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমাদ বলেন, “নদীতে এখন প্রচুর স্রোত। এর মধ্যে জরুরি কাজ করা কঠিন। স্রোত না কমলে কাজ করা যাবে না। এই ভাঙনরোধে স্থায়ী বাঁধ করতে ব্যায় হবে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। প্রয়োজনমত অর্থ বরাদ্দ পাচ্ছি না। এটাই সমস্যা।”

আগামী শুকনো মৌসুমে স্থায়ীভাবে যাতে কাজ করা যায় সে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।