ব্যস্ত সড়ক ঘেঁষে স্কুল, ঠাকুরগাঁওয়ে ঝুঁকিতে শিশুরা

স্কুলের সীমানা প্রাচীর ভেঙে সড়ক চওড়া করায় ঝুঁকিতে মুখে পড়েছে ঠাকুরগাঁও শহরের কোকিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা।

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিশাকিল আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2019, 06:31 AM
Updated : 10 Oct 2019, 06:54 AM

জেলা শহর থেকে চারটি উপজেলায় যোগাযোগের একমাত্র পথ বঙ্গবন্ধু সড়কটি সম্প্রতি চার লেন করতে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটে বলে জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।

সরজমিনে দেখা যায়-বঙ্গবন্ধু সড়ক ঘেঁষে স্কুলটির সামনে কোনো গতিরোধ বা সতর্কীকরণ সাইনবোর্ডও নাই।

বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক দিয়ে বেপরোয়াভাবে চলে বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, ভটভটিসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন।

শিক্ষার্থীরা চলন্ত গাড়ির সামনে হাত উঁচিয়ে গাড়ি থামিয়ে সড়ক পার হচ্ছে।

এ ছাড়া বিদ্যালয়টির পাশেই জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জজ আদালত, পৌরসভা কার্যালয়, থানা, মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রসহ নানা দপ্তর।

এ কারণে ওই সড়কে সব সময় যানবাহনের ব্যস্ততা লেগেই থাকে।

এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছাবেরা সুলতানা ইয়াসমিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০১৮ সালের ফেব্রুযারিতে সড়ক প্রশস্ত করার সময় কোকিল সরকারি বিদ্যালয়ের দুই পাশের অনেক স্থাপনাসহ সীমানা প্রাচীর ভাঙা পড়ে।  

১৯১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৭৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৪০ জন ছাত্রী ও ১৩৬ জন ছাত্র। শিক্ষক রয়েছেন ৯ জন।

দুর্ঘটনার ঘটার ভয়ের কথা বলতে গিয়ে এ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু হাসনাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, “বিদ্যালয়ের সামনের অল্প একটু জায়গার মধ্যে আমরা খেলাধুলা করি।

“কখন যে গাড়ি এখানে উঠে পড়ে ভয়ে থাকি সবসময়।”

স্কুলের প্রাচীর ভেঙে ফেলার পর সড়ক পার হতে গিয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রমজান আলী ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিলন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল বলেও জানায় হাসনাত।

আর ‘অল্পের জন্য দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেয়েছে আরও কয়েকজন’ শিক্ষার্থী।

স্কুলটির সহকারী শিক্ষক সাফিয়া বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শিক্ষার্থীদের সবসময় চোখে চোখে রাখতে হয়। তবুও শিক্ষার্থীরা সুযোগ পেলেই রাস্তা পেরিয়ে ওপারে চলে যায়, এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।”

আগে স্কুলের সামনের মাঠে অ্যাসেম্বলি হত উল্লেখ করে সহকারী শিক্ষক উম্মে কুলসুম জানান, মাঠের অনেকটাই রাস্তার অংশে চলে গেছে। সেখানে এখন আর অ্যাসেম্বলি সামনে করা যায় না।

“বিদ্যালয়ের পেছনে পরিত্যক্ত জায়গায় অ্যাসেম্বলি করা হয়। আর পতাকা সামনে উড়িয়ে দেওয়া হয়।”

অভিভাবক সুজন ইসলাম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা চঞ্চল প্রকৃতির। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যালয়টির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা জরুরি।

আব্দুল কাইয়ুম বলেন,“শিশুরা কখন যে ছোটাছুটি করে সড়কে চলে আসে, সে আতঙ্কে সব সময় থাকতে হয়।”

বিদ্যালয়ের সামনে গতিরোধক নির্মাণ ও বিদ্যালয় চলাকালে ট্রাফিক পুলিশ রাখার দাবি জানালেন শারমিন আক্তার নামে এক অবিভাবক।

রাস্তা পারাপারের সময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনায় পড়ার কথা উল্লেখ করে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, “প্রশাসনের কাছে ট্রাফিক পুলিশ দেওয়ার জন্য আবেদন করেও পাওয়া যায়নি।”

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেটা বাস্তবয়ন হলে আর এ সমস্যা থাকবে না।