বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা: রাজশাহীতে মহাসড়ক অবরোধ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Oct 2019, 11:39 AM
Updated : 7 Oct 2019, 11:39 AM

রোববার গভীর রাতে বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফাহাদ থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলে। ওই হলের সিঁড়িতে তার লাশ পড়ে ছিল।

এ ঘটনার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সোমবার বেলা দুইটা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন। এর আগে তারা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

বেলা ২টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. লুৎফর রহমান শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বললেও তারা আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন।

মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমানও তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে বলেন। কিন্তু তারা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন অবরোধকারীদের উদ্দেশে বলেন, “এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন, প্রশাসন তাদের চিকিৎসার দায় নেয়নি।

“সব বিশ্ববিদ্যালয়েই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বললে মুখ বন্ধ করে দেওয়ার একটা বিষয় তৈরি হয়েছে। আর এখন খুনও করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন এমন একটি ফ্যাসিবাদী পর্যায়ে চলে গেছে। সকল দুর্নীতিবাজকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হোক।”

এ সময় রাস্তায় আটকা পড়া যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন। অনেকে বিরক্ত হন। অনেককে হেঁটে শহরের দিকে যেতে দেখা গেছে।

তাদের উদ্দেশে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু হাসান বলেন, “আমরা এখানে কেন দাঁড়িয়েছি তা আপনারা অনেকে হয়ত জানেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিন দিন অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।”

বাসচালক আব্দুস সালাম বলেন, “আমরা জানতাম না এখানে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়েছে। আগে জানলে বাইপাস দিয়ে চলে যেতাম।”

জান্নাতুল নামে একজন বাসযাত্রী বলেন, “তারা ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছে, কিন্তু তা আমাদের ভোগন্তিতে ফেলে।”

বুয়েট ছাত্র ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “ভোঁতা কিছু দিয়ে মারা হয়েছে। ফরেনসিকের ভাষায় বলে- ব্লান্ট ফোর্সেস ইনজুরি। বাংলা কথায়, ওকে পিটিয়ে মারা হয়েছে।”

তার হাতে, পায়ে ও পিঠে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “ইন্টার্নাল রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।”

পুলিশ বলছে, আবরারকে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডেকে নিয়ে যায় কয়েকজন। পরে শিক্ষার্থীরা রাত ২টার দিকে হলের দ্বিতীয়তলার সিঁড়িতে তার লাশ পায়।