রোববার রাত ২টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
রাত ৩টার দিকে আবরারের পরিচিত একজন ফোন করে মৃত্যুর খবরটি তার পরিবারকে জানান।
বাড়িতে ছুটির ১০ দিন কাটিয়ে গত রোববার ঢাকায় আবরারের ফিরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘কে বা কারা কী কারণে ছেলেকে হত্যা করেছে তার কিছুই জানেন না।”
এই হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তিনি।
অবসর প্রাপ্ত ব্র্যাককর্মী বরকত উল্লাহ-রোকেয়া দম্পতির বড় ছেলে আবরার। তারা কুষ্টিয়া শহরের ম আ আব্দুর রহিম সড়কের (পিটিআই রোড) এক বাড়ির বাসিন্দা। সেখানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় শোকের মতম চলছে।
আবরার ২০১৫ সালে কুষ্টিয়া জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন ২০১৭ সালে ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-ফাইভ পান তিনি।
নিহতের পারিবারের সদস্যরা জানান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটে ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন তিনি। সেখানে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন।
নিহত আবরার কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত ছিল না দাবি করে তার ছোট ভাই ঢাকা কলেজের দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র আবরার ফায়াজ বলেন, “যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারাই অপপ্রচার চালাচ্ছে যে ফাহাদ ছাত্রশিবির করত।”
কুষ্টিয়াতে বসবাস করলে আবরারের পরিবারের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে।
কুষ্টিয়ায় আবরাররা তেমন পরিচিত না হলেও তাদের রায়ডাঙ্গা গ্রামে তাদের জ্ঞাতিগোষ্ঠী সবাই বেশ পরিচিত।
এক সময় এ পরিবারের সদস্যরা কৃষি কাজে যুক্ত থাকলেও পরে পরিবারের অধিকাংশ সদস্য বিভিন্ন জায়গায় চাকরিতে যোগ দেন বলে জানায় গ্রামের লোকজন।
আবরারের স্বজনরা কট্টর জামাত-শিবিরপন্থি বলে দাবি করলেও সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল হক স্বপন বলেন, “জানা মতে ছেলেটি ভালো এবং ওকে রাজনীতির সাথে যুক্ত হতে দেখিনি।”
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে ছেলের পড়াশোনার সূত্রে বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া শহরে বসবাস শুরু করে উল্লেখ করে তিনি জানান, মাঝে মধ্যে আবরারও গ্রামের বাড়িতে এসেছে।