উপাচার্যের পদত্যাগের একদিন পর মঙ্গলবার ক্যাম্পাসের জয় বাংলা চত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এক সংবাদ সম্মেলনে এ ষোষণা দেন।
তবে উপাচার্যের পদত্যাগ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির পর আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবে বলে শিক্ষার্থীরা সংবাদ জানিয়েছেন।
অনিয়ম, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে শিক্ষার্থীদের প্রবল আন্দোলনের মুখে সোমবার বিকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আল গালিব।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থী কল্যাণ মিত্র, প্রিয়তা দে, রেহনুমা তাবাসসুম ঐশি, শরীফ আল রাজু, শিকদার মাহবুবসহ অনেকে।
এদিকে ভিসির পদত্যাগে মঙ্গলবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসে গান করে, নেচে-গেয়ে, একে অপরের মুখে রং মাখিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে একটি আনন্দ মিছিলও বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে জয়বাংলা চত্বরে এসে শেষ হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি আন্দোলনে সহযোগিতার জন্য গণমাধ্যম, গোপালগঞ্জের গোবরা ইউনিয়নবাসীসহ দেশবাসীকে শিক্ষার্থীরা ধন্যবাদ জানান।
সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা দুর্নীতি দমন কমিশনকে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান সকল দুর্নীতি, অনিয়ম ও অবিচারের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকল দোষীকে বিচারের আওতায় আনার আহবান জানিয়েছেন।
এভাবে বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা-গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে বলে তারা আশা করেন।
গত ১১ সেপ্টেমরব আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা-তুজ জিনিয়াকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এনিয়ে ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জিনিয়ার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। ১৯ সেপ্টেমর থেকে শিক্ষার্থীরা অনিময়ন, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগে এনে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু করেন।
২১ সেপ্টেম্বর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ভিসির সমর্থকরা হামলা করলে ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটি রোববার ভিসিকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
শিক্ষার্থীদের ১২ দিনের প্রবল আন্দোলনের মুখে সোমবার বিকালে ভিসি পদত্যাগ করেন।
শিক্ষার্খী লোকমান হোসেন বলেন, “আমরা আজ ১২ হাজার শিক্ষার্থী আনন্দে উদ্বেলিত। স্বৈরাচারী ভিসির পতনের মধ্যে দিয়ে আমরা মুক্তি পেয়েছি। এখন ক্যাম্পাসে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ ফিরে আসবে।”
শিক্ষার্থী প্রিয়তা দে বলেন, “জাতির পিতার নামের এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষায় মনোযোগ দিয়ে ভালো রোজাল করে জাতির মুখ উজ্জ্বল করতে চাই। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মসিউর রহমান বলেন, “এখন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। আশা করি, পূজার ছুটির পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মনোযোগ দেবে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। এখানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করবে।”