কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে গেল সেতুর গার্ডার

টাঙ্গাইলে একটি সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিএম এ রাজ্জাক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Sept 2019, 05:41 PM
Updated : 29 Sept 2019, 05:41 PM

ঘাটাইল উপজেলার টোক নদীর উপর এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এলাকার মানুষের বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত এই সেতু ভেঙে পড়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

গত বৃহস্পতিবার মেশিন দিয়ে একটি গার্ডার বসানোর সময় তা ভেঙে যায়।

ঘাটাইল উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী এ কে এম হেদায়েত উল্লাহ বলেন, উপজেলার বানিয়াপাড়া ও বাইচাইল গ্রামের সংযোগস্থলে টোক নদীর উপর এ সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ৮১ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩.৭ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকা। নির্মাণ কাজে সময় ধরা হয়েছে তিন বছর। এক বছর সময়ের মধ্যে প্রায় ৬৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। নকশা অনুযায়ী নয়টি গার্ডার বসবে সেতুটিতে। এরই মধ্যে ছয়টি গার্ডার বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। গার্ডারগুলোর ঢালাইয়ের কাজ উপরেই শেষ করা হচ্ছে।

“গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেশিন দিয়ে ৭ম গার্ডারটি বসানোর সময় তা ভেঙে যায়।”

ভেঙে যাওয়া অংশের ছবি তুলে অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, সেতুটি নির্মাণে পাথর ও বালুর অনুপাতে সিমেন্ট দেওয়া হয়নি। এক বস্তা সিমেন্টের সঙ্গে ৭ বস্তা বালু ও ৭ বস্তা পাথর দেওয়া হয়েছে। এ কাজে কিছু বাংলা রড ব্যবহার করা হয়েছে, যা এখনো পাশে পড়ে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আরেকজন বলেন, শুরুতে ব্রিজের নকশার চেয়ে দুই ফুট নিচু করেছিল ঠিকাদার, পরে ঢাকা থেকে ইঞ্জিনিয়ার এসে ভুল ধরে সংশোধন করে দেন।

তিনি বলেন, ঢালাইয়ের অধিকাংশ কাজ সন্ধ্যার সময় ও বৃষ্টির মধ্যে করা হয়েছে। যেসময় মানুষ ওইখানে যায় না। উত্তর পাশে যে গার্ডার বসানো হয়েছে সেটিও ফেটে গেছে।

ব্রিজটির সার্বিক দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার সবুজ ব্রিজের কতটুকু কাজ হয়েছে প্রশ্নের জবাবে বলেন, “চোখের সামনেই তো দেখতে পাচ্ছেন।”

ঠিকাদার শ্যামল চন্দ্র সাহার ফোন নম্বর চাইলে সবুজ বলেন, “তিনি প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে বিদেশ আছেন। তার ফোন বন্ধ আছে।”

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী এ কে এম হেদায়েত উল্লাহ বলেন, “মেশিনে সমস্যা থাকার কারণে গার্ডার টেনশনিং করার সময় ফেল করে। যার কারণে গার্ডারটি ভেঙে যায়।”

তিনি আরও বলেন, “যথাযথ নিয়ম মেনেই বালু, সিমেন্ট আর পাথরের কাজ করা হয়েছে। তাই সাধারণ মানুষের অভিযোগ সঠিক না। তাছাড়া লোকা বা বাংলা রড় নয়, সিডিউলে যে রড় ধরা আছে তা পরীক্ষা করেই ঠিকাদার কাজ করছে।”

এ ব্যাপারে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, “এই ঘটনা ঘটার পরেই আমি ইঞ্জিনিয়ারকে তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলেছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর গার্ডার ভাঙার কারণ জেনে ঠিকাদরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”