সেতুতে ফাটল: ‘ঝুঁকি নিয়ে’ চলাচলে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসও

সিরাজগঞ্জে ২৮ ও ২৯ নম্বর রেলসেতুর গার্ডারে ফাটল ধরে এবং লোহার পাত ক্ষয়ে যাওয়ায় রেল চলাচল ঝুঁকিতে পড়েছে।

ইসরাইল হোসেন বাবু সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2019, 10:40 AM
Updated : 21 Sept 2019, 10:49 AM

এ রেলপথেই ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ প্রায় ১৪টি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন ও ৬টি তেল, কয়লা ও মালবাহী ট্রেন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বলে জানান উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম।

তিনি জানান, ঢাকা-ঈশ্বরদী রেল রুটে সিরাজগঞ্জ থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত বেশিভাগ রেলসেতু ‘ব্রিটিশ আমলে নির্মিত’। এ দুইটি সেতুর বয়স ‘একশ’ বছর পার হয়েছে।’

উল্লাপাড়া ও ভাঙ্গুড়া উপজেলার রেলপথ চলনবিলের মধ্যে হওয়ায় প্রতি বছর বন্যার পানির তীব্র স্রোতের ধাক্কায় সেতু দুইটির গার্ডার দুর্বল হয়ে কোথাও কোথাও ফাটলেরও সৃষ্টি হয়েছে। এতে চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

ক্ষতিগ্রস্ত সেতু দুইটি হচ্ছে উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের বঙ্কিরাট এলাকার ২৮নং ও কয়ড়া ইউনিয়নের মহিষাখোলা কামারপাড়া এলাকার ২৯নং রেলসেতু।

রাজধানী ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের রেল যোগাযোগের একমাত্র পথের উপর এসব সেতু দিয়ে প্রতিদিন থেমে থেমে ধীরগতিতে ঢাকার সাথে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় ২০টি ট্রেন চলছে।

ক্ষতিগ্রস্ত সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচলের কথা স্বীকার করে পাকশী রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় রেলপথ ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আহসান উল্লাহ ভূইঁয়া বলেন, “বর্ষা মৌসুমে চলনবিলের বন্যার পানির তীব্র স্রোতের আঘাতে সেতু দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

“বর্ষা শেষ হলেও এখনও সেখানে অনেক পানি। এ অবস্থায় সেখানে মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।”

এ কারণে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সেতুর নিচে অস্থায়ী ভাবে সিসি ক্লিক (লোহার খাঁচা) নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বন্যার পানি কমে গেলে ওই সেতুর পাশে বিকল্প ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু দুইটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে।

“এর জন্য কিছু দিন সময় লাগবে।”    

ক্ষতিগ্রস্ত কয়ড়া ইউনিয়নের মহিষাখোলা কামারপাড়া সেতু ঘুরে দেখা যায়, সেতুর গার্ডারে বেশ কয়েকটি ফাটল। ওই ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর নিচে লোহার অ্যাঙ্গেল, কাঠের স্লিপার, সিসি ক্লিক দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে।

দুটি সেতুর দুই পাশে ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি সীমা ২০ কিলোমিটার লেখা সতর্ক সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। পাশাপাশি সেখানে রেল বিভাগ থেকে দুইজন ওয়েম্যানও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

দায়িত্বরত ওয়েম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, জাহাঙ্গীর আলম ও তিনি পালাক্রমে এখানে ডিউটি পালন করেন।

ট্রেন আসা দেখলেই তারা লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার সংকেত দেয় উল্লেখ করে বলেন, চালক এ সংকেত পেয়ে এ ট্রেন থামিয়ে দেয়। এরপর গতি কমিয়ে সেতু পার হয়।

এই সেতু দিয়ে প্রতিটি ট্রেন ‘মাত্র ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার বেগে’ চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এর উপরে গেলেই ব্রীজটি ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে উঠছে। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।”