বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেন। এ সময় তারা ভিসির কুশপুত্তলিকা প্রদর্শন এবং বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার ফেইসবুক পোস্টকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ দাবি করে তাকে বহিষ্কার করা হয়।জিনিয়া ডেইলি সান পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
জিনিয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ করেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-সাংবাদিকরা। এরপর বুধবার জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়। এ ঘটনার পর আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ১৪টি বিষয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আন্দোলন বন্ধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের এক দফা এক দাবি ‘ভিসির পদত্যাগ’ বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ফারজানা আফরিন বলেন, “আন্দোলনকারীরা যাতে করে বাড়ি চলে যায় তার জন্য গোপালগঞ্জের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বাস সার্ভিস বৃহস্পতিবার ফ্রি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”
এ সময় শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের বাড়ি চলে যেতে চাপ প্রয়োগ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের এ শিক্ষার্থী।
এছাড়া কিছু ভিসিপন্থী শিক্ষার্থী আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্যের পদত্যাগ ও বিভিন্ন দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বুধবার রাতে আন্দোলন শুরু হয়। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, উপাচার্য নাসির উদ্দিনের পদত্যাগ, ফেইসবুকে কোনো ধরনের লেখালেখির কারণে বহিষ্কার না করা, বেতন-ফি কমানো ইত্যাদি।
বুধবার রাতেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে সব দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলেও সকালে আবার আন্দোলন শুরু হয়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সকল ন্যায্য দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক সমাজ তাদের অবস্থান নিশ্চিত করে ১৬টি দাবি তুলে ধরেন।
তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্ষেত্রে বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, স্নাতক (সন্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফর্মের দাম কমানো, বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে মেধা যাচাই করা ইত্যাদি।
আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক খোন্দকার নাসিরউদ্দিন বলেন, “সরকার বিরোধী একটি চক্র ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।”