ফেইসবুকে লেখার কারণে বহিষ্কার করবে না গোপালগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির কারণে আর কাউকে বহিষ্কার করা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Sept 2019, 12:57 PM
Updated : 19 Sept 2019, 02:14 PM

বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মো. নূরউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি আদেশ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে ফেইসবুকে ভিন্নমত প্রকাশের অপরাধে বহিষ্কার করা হয়। এ নিয়ে সারাদেশের সাংবাদিক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সমালোচনা করেন।

ফলে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জিনিয়ার বহিষ্কার-আদেশ প্রত্যাহার করে। তবু বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণসহ ১৪ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়টি বৃহস্পতিবার এই আদেশ প্রকাশ করে।

আদেশের ৪ নম্বরে বলা হয়েছে, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান করা হবে না।”

আদেশের ১২ নম্বরে বলা হয়েছে, “ফেইসবুকে স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না।”

এ বিষয়ে উপাচার্য খোন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করছি। এ কারণে ১৪ দফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কল্যাণমুখী এ সিদ্ধান্তে অধিকাংশ শিক্ষার্থী আন্দোলন থেকে সরে গেছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রায় থেমে গেছে।”

আন্দোলন কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যকে বিএনপি-জামায়াতপন্থী বলে প্রচার করে।

এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “আমি বিএনপি-জামায়াতপন্থী নই। শিক্ষার্থীরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।”

গত দুই বছরে ৩৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা সম্পর্কে তিনি বলেন, তাদের সাময়িক বহিষ্কার করলেও প্রত্যেকের ওপর থেকেই সে আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

১৪টি আদেশের মধ্যে আরও রয়েছে এ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ বা বহিষ্কারের ঘটনা ঘটবে না, শিক্ষার্থীদের প্রতি ব্যক্তিগত ক্ষোভ তাদের একাডেমিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না এবং এমন কিছু হলে ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা হবে, ভর্তি হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে কোনো শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার নোটিশ দেওয়া হবে না, সব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নেবে, হলে প্রতি সিটের ভাড়া ১৫০ টাকা এবং রুমের ভাড়া ৫০ টাকা করা, ভর্তি ফি সর্বমোট ১৪ হাজার টাকা ও সেমিস্টার ফি দুই হাজার টাকা করা, বিভাগ উন্নয়ন ফি বাদ দেওয়া, ছাত্র সংসদের নামে যে টাকা দেওয়া হয় তার জবাবদিহি করা ইত্যাদি।