রাজশাহীতে মা- ছেলে হত্যায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

রাজশাহীর বাগমারায় পাঁচ বছর আগে এক নারী ও তার ছেলেকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তার দেবরসহ তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 05:59 AM
Updated : 18 Sept 2019, 06:53 AM

রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার বুধবার চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবুল জানান, ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে বাগমারার দেউলা গ্রামের আকলিমা বেগম ও তার ছেলে জাহিদ হাসানকে গলাকেটে হত্যা করা হয়।

আদালতের রায়ে আকলিমার দেবর আবুল হোসেন মাস্টার এবং হাবিবুর রহমান হাবিব ও চাকরিচ্যুত বিজিবি সদস্য আব্দুর রাজ্জাককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

দেউলা রানী রিভারভিউ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আলীপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে।

এ মামলায় যাবজ্জীবন প্রাপ্তরা হলেন দুর্গাপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আতাউর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল কাফি, একই গ্রামের লবির উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমিন, দুর্গাপুরের খিদ্রকাশিপুর গ্রামের ছাবের আলীর ছেলে রুস্তম আলী এবং খিদ্রলক্ষ্মীপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির।

যাবজ্জীবনের পাশাপাশি বিচারক তাদের দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

এন্তাজুল হক জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আকলিমার বড় ছেলে দুলাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে বাগমারা থানায় মামলা করেন।

এরপর থেকে এই জোড়া খুনের তদন্ত বিভিন্ন সময় নানা মোড় নেয়। তিন দফা বদল করা হয় তদন্ত কর্মকর্তা। সবশেষ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মামলাটির তদন্ত করে।

এরপর ২০১৮ সালের ৩১ মে পিবিআইয়ের পরিদর্শক আলমগীর হোসেন সাতজনকে অভিযুক্ত করে এ অভিযোগপত্র দাখিল করলে এ মামলার বিচারকাজ শুরু করে আদালত।  

দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য এ বছরের এপ্রিলে আলোচিত এ মামলাটি জেলা জজ আদালত থেকে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। মামলাটিতে মোট ৫১ জন সাক্ষী ছিলেন। আদালত ৪৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে।

এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আকলিমা বেগমের দেবর আবুল হোসেন মাস্টার এবং হাবিবুর রহমান হাবিব আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

নিহত আকলিমা বেগমের বড় ছেলে দুলাল হোসেন বলেন, ছোটবেলায় তার বাবা মারা যাওয়ার পর চাচা আবুল হোসেনই সব সম্পত্তির দেখাশোনা করতেন। ২০১৪ সালে তার ভাই জাহিদ রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শন বিভাগে মাস্টার্স শেষ করেন।

চাচা আবুল হোসেনের পর তার ভাই জাহিদ ছিল একমাত্র উচ্চ শিক্ষিত। বিষয়টি মেনে নিতে পারতেন না চাচা। জাহিদ পড়াশোনা শেষ করে চাচার কাছ থেকে সব সম্পত্তি বুঝে নিতে চায়। এ নিয়ে চাচার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল।

এর জেরে তার মা ও ভাইকে ভারাটে খুনি দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় বলে জানান দুলাল।